২৪ অক্টোবর ২০২৪: ধীরে ধীরে সমুদ্রের ওপর দিয়ে স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের রাত ১০টার বুলেটিন অনুযায়ী, গত ছ’ঘণ্টায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা থেকে ঘূর্ণিঝড়টি কতটা দূরে রয়েছে, তাও জানানো হয়েছে বুলেটিনে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার মধ্যরাতে ‘দানা’ ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’-এ রূপান্তরিত হতে পারে। সেই সময় সমুদ্রের ওপর ঝোড়ো বাতাসের গতি পৌঁছতে পারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটারে।
আবহাওয়া দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের সংলগ্ন এলাকায় উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে চলেছে ‘দানা’। বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি সাগরদ্বীপ থেকে ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে। ওড়িশার ধামারা থেকে এটি ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং পারাদ্বীপ থেকে ৪২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ‘দানা’ আপাতত একটি সাধারণ ঘূর্ণিঝড়। তবে শক্তি বাড়িয়ে বুধবার রাতের মধ্যে এটি ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’-এ পরিণত হতে পারে। তখন বাতাসের গতিবেগ আরও তীব্র হতে পারে। মধ্যরাতের পর থেকে সমুদ্রের ওপর ঝোড়ো বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার হতে পারে, এবং দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। আবহবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে ঝড়ের গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যেতে পারে এবং দমকা হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার। সেই সময় সমুদ্রের ওপর ঝড়ের গতিবেগ ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকতে পারে এবং দমকা হাওয়ার গতি কখনও কখনও ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে।
আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে। ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারা পর্যন্ত এর ‘ল্যান্ডফল’ হতে পারে। তবে শুক্রবার দুপুরের পর ঝড়ের শক্তি কিছুটা কমে আসবে। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ৯৫ থেকে ১০৫ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাতে তা আরও কমে ঘণ্টায় ৬৫ থেকে ৭৫ কিলোমিটারে নেমে আসতে পারে।
বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যার জন্য লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কিছু এলাকায় ২০ সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এছাড়া, দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবারও পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির জন্য লাল সতর্কতা থাকবে। ওই দিনও কিছু এলাকায় অতি প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।