বিজ্ঞাপনের বাহারি কথা যতই আকর্ষণীয় হোক না কেন, ‘এনার্জি ড্রিংকস’ স্বাস্থ্যকর নয়।
ক্লান্তি দূর করতে বা উদ্যম ধরে রাখতে অনেকেই এনার্জি ড্রিংকসের আশ্রয় নেন, তবে এতে লাভের চেয়ে ক্ষতির দিকটাই বেশি।
এ ধরনের পানীয়তে সাধারণত অত্যধিক ক্যাফিন থাকে, যা শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সিএনএন-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে ‘জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি’র সহযোগী অধ্যাপক ডা. লিয়ানা ওয়েন বলেন, “এনার্জি ড্রিংকস বলতে এমন পানীয়কে বোঝানো হয় যা শরীরে শক্তি ও উদ্দীপনা জোগায়। এতে সাধারণত প্রচুর ক্যাফিন থাকে, সঙ্গে প্রচুর চিনি ও উত্তেজনা বাড়ানোর উপাদান যেমন- টরাইন, গুরানা এবং এল-কার্নিটিন।”
অতিরিক্ত ক্যাফিন শরীরে গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ডা. ওয়েন আরও বলেন, “বেশি ক্যাফিন খেলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে, বুক ধড়ফড় করতে পারে এবং উদ্বেগ বাড়াতে পারে। ঘুমের সমস্যা তৈরি হতে পারে, যা পরে আরও ক্লান্তি ডেকে আনে।”

এছাড়া পিপাসা মেটাতে এই ধরনের পানীয় পান করলে শরীর আরও বেশি জলশূন্য হয়ে পড়ে, কারণ এতে থাকা ক্যাফিন মূত্রের পরিমাণ বাড়ায়।
অতিরিক্ত ক্যাফিন থেকে হতে পারে ‘ক্যাফিন ইনটক্সিকেশন’, যা থেকে হৃদরোগ, ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’, মস্তিষ্কে জল জমা এবং কিডনি বিকল হওয়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে।
‘ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’য়ের মতে, দৈনিক ৪০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফিন গ্রহণ করা অতিরিক্ত হিসেবে ধরা হয়, যা প্রায় ৪-৫ কাপ কফির সমান।
বেশিরভাগ এনার্জি ড্রিংকসেই ২০০ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম ক্যাফিন থাকে, তাই এ ধরনের পানীয় পান করার আগে লেবেল দেখে পরিমাপ নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকস’ শিশুদের জন্য এ ধরনের পানীয় থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে, কারণ এগুলো শিশুদের ওজন বৃদ্ধি, হৃদরোগ এবং যকৃতের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

শক্তি বৃদ্ধির জন্য এ ধরনের পানীয়ের পরিবর্তে সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. ওয়েন।
তিনি বলেন, “শরীর আর্দ্র রাখতে এবং ক্লান্তি দূর করতে নিয়মিত জল পান ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। তবে যদি ক্রমাগত অবসাদ ও ক্লান্তি অনুভব হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, কারণ এর পেছনে অ্যানিমিয়া, হাইপোথাইরয়ডিজম বা ঘুমের সমস্যা থাকতে পারে।”
তাই সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকতে পর্যাপ্ত ঘুম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চার দিকে নজর দিতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।