পথে নামলেন রাধাগোবিন্দ করের পরিবারও
ব্রিটিশ শাসন থেকে বাংলার মাটিতে স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ার সাহসিক উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ রাধাগোবিন্দ কর। তাঁরই পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছিল ক্যালকাটা স্কুল অফ মেডিসিন, যা বর্তমানে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল নামে পরিচিত। চিকিৎসাশাস্ত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে। কিন্তু আজ সেই হাসপাতালেই ঘটে গেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। একজন মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে, যা এই মহান চিকিৎসকের সম্মানে কালিমা লেপন করেছে বলে মনে করছেন অনেকে।

ডাঃ রাধাগোবিন্দ করের ১৭৪তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর হাওড়ার পুরনো ভিটেতে বসে পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম এই আক্ষেপ প্রকাশ করেন। হাওড়ার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বেতড় মোড়ে অবস্থিত কর পরিবারের পুরানো বাড়িটি, যার অন্দরে রয়েছে দুর্গা দালান এবং পাশেই ডাঃ করের জন্মস্থল। বর্তমানে বাড়িটির একাংশ ভগ্ন অবস্থায় রয়েছে, ১৯৭৮ সালের বন্যায় ভেঙে গিয়েছিল তার বেশ কিছু অংশ। তবে বাড়ির সামনের অংশে এখনও কর পরিবারের ছয়টি পরিবার বাস করে। প্রতি বছরই চিকিৎসকের জন্মদিনে তাঁরা অতি সাধারণভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তবে এই বছর সংবাদমাধ্যমের নজরে আসে বাড়িটি এবং কর পরিবারের সদস্যদের এই বিষয়ে দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
পার্থ কর, কর পরিবারের চতুর্থ প্রজন্মের সদস্য, বলেন, “রাধাগোবিন্দ করের প্রতিষ্ঠানে এমন ঘৃণ্য ঘটনা ঘটবে, তা ভাবাই যায় না। এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় তাঁর নাম বারবার সমালোচনার কেন্দ্রে উঠে আসছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”
পঞ্চম প্রজন্মের সদস্যা স্বাগতা ঘোষ, যিনি ডাঃ করের নাতনি, বলেন, “এই বাড়িতেই রাধাগোবিন্দ করের জন্ম এবং শৈশব কেটেছে। শ্যামবাজারে চলে যাওয়ার পরেও এই বাড়ির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক অটুট ছিল। আজকের দিনেও তাঁর নাম যখন চিকিৎসাশাস্ত্রে গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হওয়া উচিত, তখন তা অপমানিত হচ্ছে।”
পরিবারের নতুন প্রজন্মের সদস্য রূপান্তর ঘোষ, যিনি পেশায় আইটি কর্মী, এই ঘটনার প্রতিবাদে ন্যায়বিচারের দাবিতে মিছিলে অংশ নিয়েছেন। তিনি বলেন, “নিহত চিকিৎসকের পরিবার যেন সঠিক বিচার পায়, তাতেই হয়ত আর জি করের সম্মানে লেগে থাকা এই অপমানের দাগ মুছে যাবে।”