সকালের টিফিন বা প্রাতঃরাশ নিয়ে শিশুদের বায়নার শেষ নেই। তার ওপর আছে স্কুলের টিফিনে কী দেবেন তা নিয়ে চিন্তা। জ্যাম, জেলি—শিশুরা কেন, সব বয়সি মানুষই খেতে ভালোবাসেন। মচমচে পাউরুটির টোস্টের ওপর বা টোস্ট বিস্কুটের সঙ্গে একটু জ্যাম থাকলে আর কিছুই লাগে না! বাজার থেকে না কিনে, ঘরেই কীভাবে সহজে এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে জ্যাম, জেলি বানিয়ে নিতে পারেন, তারই রইল কয়েকটি রেসিপি।
আনারস জ্যাম
উপকরণ:
- আনারসের পাল্প – ৩ কাপ
- অ্যাগার অ্যাগার – দেড় চা-চামচ
- সাইট্রিক অ্যাসিড – আধা চা-চামচ
- আদাবাটা – ১ চা-চামচ
- চিনি – সাড়ে তিন কাপ
- সোডিয়াম বেনজয়েট – সিকি চা-চামচ
- আনারস এসেন্স – ১ চা-চামচ
- লবণ – আধা চা-চামচ
প্রণালি:
- আনারস দুই ভাগ করে কাঁটা চামচ দিয়ে কেচে নিন বা ব্লেন্ড করুন।
- চিনিসহ আনারস সেদ্ধ করুন। এতে আদা ও লবণ মেশান।
- অ্যাগার অ্যাগার গরম জলে ১০ মিনিট ভিজিয়ে আনারসের মিশ্রণে যোগ করুন।
- আনারসের মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে নামিয়ে সোডিয়াম বেনজয়েট, সাইট্রিক অ্যাসিড ও আনারস এসেন্স মিশিয়ে দিন।
- মিশ্রণটি বয়ামে ঢেলে ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করুন।
মেস্তার জ্যাম
উপকরণ:
- মেস্তা ফল – ২ কাপ
- চিনি – ২ কাপ
- জল – ৪ কাপ
প্রণালি:
- মেস্তার পাপড়ি ছাড়িয়ে ধুয়ে ৩ কাপ গরম জলে অভেনে বসান।
- ফুটে উঠলে জল ঝরিয়ে ১ কাপ জল দিয়ে আবার অল্প আঁচে বসান।
- মেস্তা গলে গেলে চিনি যোগ করে জ্বাল দিন।
- জ্যামের মতো ঘন হয়ে এলে নামিয়ে বোতলে সংরক্ষণ করুন।
কমলা মারমালেড
উপকরণ:
- কমলার রস – ২ কাপ
- মালটার রস – ২ কাপ
- চায়না গ্রাস কুচি – ১ কাপ
- সাইট্রিক অ্যাসিড – ১ চা-চামচ
- চিনি – ৪ কাপ
- কমলার খোসা – ২ টেবিল চামচ
- সোডিয়াম বেনজয়েট – সিকি চা-চামচ
- অরেঞ্জ ইমালশন – আধা চা-চামচ
- অরেঞ্জ অয়েল – আধা চা-চামচ
প্রণালি:
- চায়না গ্রাস ২ কাপ গরম জলে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন এবং মৃদু আঁচে গলিয়ে নিন।
- কমলার খোসা লম্বা করে কুচি করে সেদ্ধ করুন ও জল ঝরিয়ে নিন।
- কমলার রস ও চিনি মিশিয়ে অভেনে জ্বাল দিন।
- রস ঘন হয়ে এলে চায়না গ্রাসের মিশ্রণ যোগ করে জ্বাল দিন।
- মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে কমলার খোসা মিশিয়ে নামিয়ে নিন এবং গরম-গরম বয়ামে ভরে ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করুন।
মিশ্র ফলের জ্যাম
উপকরণ:
- বিভিন্ন ফলের পাল্প (আম, পেঁপে, আনারস, কমলা, মালটা, আপেল, আঙুর ইত্যাদি) – ১ কেজি
- চিনি – ১ কেজি
- অ্যাগার অ্যাগার – দেড় চা-চামচ
- সাইট্রিক অ্যাসিড – দেড় চা-চামচ
- ম্যাঙ্গো ইমালশন – সিকি চা-চামচ
- ম্যাঙ্গো সুইট এসেন্স – আধা চা-চামচ
- অরেঞ্জ ওয়েল – ১ চা-চামচ
- অরেঞ্জ ইমালশন – ১ চা-চামচ
- পটাশিয়াম মেটাবাইসালফাইট – সিকি চা-চামচ
প্রণালি:
- ফলের পাল্প চিনিসহ মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন।
- অ্যাগার অ্যাগার অল্প জলে ভিজিয়ে রাখুন।
- চিনির শিরা মিশে গেলে অ্যাগার অ্যাগার দিন এবং ঘন হলে নামিয়ে সাইট্রিক অ্যাসিড ও অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে নিন।
- গরম অবস্থায় বোতলে ভরে সংরক্ষণ করুন।
পেয়ারার জেলি
উপকরণ:
- পাকা পেয়ারার রস – ৪ কাপ
- চিনি – ৪ কাপ
- অ্যাগার অ্যাগার – আড়াই চা-চামচ
- সাইট্রিক অ্যাসিড – ১ চা-চামচ
- পটাশিয়াম মেটাবাইসালফাইট – সিকি চা-চামচ
প্রণালি:
- প্রথমে পাকা পেয়ারা কেটে সেদ্ধ করে নিন। তারপর পেয়ারা সেদ্ধ হয়ে গেলে এটি ছেঁকে রস আলাদা করে নিন। লক্ষ রাখতে হবে, পেয়ারা ছেঁকার সময় নাড়া দেওয়া যাবে না, যাতে রস পরিষ্কার থাকে।
- অ্যাগার অ্যাগার আধা কাপ গরম জলে ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।
- পেয়ারার রস আবার ছেঁকে নিন এবং চিনি মিশিয়ে ওভেনে জ্বাল দিন।
- যখন রসের শিরা ঘন হয়ে আসবে, তখন ভেজানো অ্যাগার অ্যাগার দিয়ে মিশ্রণটি ভালোভাবে জ্বাল দিন।
- রসের পরিমাণ যখন এক-তৃতীয়াংশ কমে আসবে, তখন এতে সাইট্রিক অ্যাসিড ও পটাশিয়াম মেটাবাইসালফাইট মিশিয়ে নিন।
- মিশ্রণটি গরম থাকা অবস্থায় বোতলে ঢেলে ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করুন।
এইভাবে তৈরি পেয়ারার জেলি স্বাস্থ্যকর এবং সারা বছর সংরক্ষণ করার মতো একটি মিষ্টি খাবার।
এই রেসিপিগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার পরিবারের জন্য তৈরি করতে পারেন সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর জ্যাম, যা সব বয়সের মানুষেরই মন জয় করবে।