বাঙালির মিষ্টি প্রেম সবসময়েই রসের মিষ্টির দিকে ঝোঁকে। তবে তা বলে শুকনো সন্দেশের স্বাদও কম নয়। বাঙালির মিষ্টি তালিকায় ছানা বা ক্ষীরের সঙ্গে চিনি বা গুড় মিশিয়ে তৈরি সন্দেশের বিশেষ স্থান রয়েছে। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য থেকে শুরু করে আজকের দিন পর্যন্ত সন্দেশের কদর অক্ষুণ্ণ রয়েছে। সন্দেশের বিভিন্ন ধরণ যেমন কাঁচাগোল্লা, জলভরা, কড়াপাক, নরমপাক, মনোহরা, চন্দ্রপুলি, প্যাঁড়া এবং কালাকাঁদ, প্রত্যেকটিরই আলাদা ফ্লেভার আছে।
কালাকাঁদের ইতিহাস
যখন কালাকাঁদের কথা উঠল, তখন এটা জেনে রাখা ভালো যে, এই মিষ্টি খাঁটি বাঙালি মিষ্টি হিসেবে পরিচিত হলেও এর আবিষ্কার রাজস্থানের আলওয়ারে হয়েছিল। বাবা ঠাকুরদাস নামে এক হালুইকর দুধ জ্বাল দিতে গিয়ে দুধ ফেটে যাওয়ার পর এই মিষ্টির আবিষ্কার করেন। ফাটা দুধকে জ্বাল দিয়ে ঘন করে, চিনি মিশিয়ে তৈরি এই মিষ্টি কালাকাঁদ নামে পরিচিতি লাভ করে। বাবা ঠাকুরদাস বলেন যে, এই মিষ্টি তৈরি করাটা একটি বিশেষ কলা, তাই এর নাম কলাকন্দ বা কালাকাঁদ।
কালাকাঁদ তৈরির সহজ পদ্ধতি
উপকরণ:
- দুধ: ৫০০ মিলিলিটার
- ছানা: ৪০০ গ্রাম
- ঘি: ১ চা চামচ
- কনডেন্সড্ মিল্ক: ২০০ মিলিলিটার
- এলাচ গুঁড়ো: ১ চা চামচ
- নুন: ১ চিমটি
তৈরি করার পদ্ধতি:
- প্রথমে ছানাকে ভালো করে ডলে নিন যতক্ষণ না তা মিহি হয়ে যায়।
- একটি পাত্রে দুধ গরম করতে বসান।
- গরম দুধে ছানা দিয়ে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন।
- মিশ্রণটি ঘন হয়ে আসলে এবং খোয়া ক্ষীরের মতো হয়ে গেলে এতে সামান্য ঘি মিশিয়ে নাড়ুন।
- এরপর এতে কনডেন্সড্ মিল্ক মিশিয়ে ভালো করে নাড়ুন।
- এখন চাইলে এতে কাজু, পেস্তা, আমন্ডের গুঁড়ো এবং এক চিমটি কেশর দিতে পারেন।
- এলাচ গুঁড়ো এবং সামান্য নুন দিয়ে মিশ্রণটি ভালো করে মেশান।
- গ্যাসের আঁচ বন্ধ করে একটি ঘি গ্রিজ করা পাত্রে মিশ্রণটি ঢেলে সমানভাবে ছড়িয়ে দিন।
- মিশ্রণটি ঠান্ডা হওয়ার জন্য পাখার হাওয়ায় রেখে দিন এবং পরে সেটিকে আধ ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে রাখুন।
- ফ্রিজ থেকে বের করে ছুরি দিয়ে সমানভাবে টুকরো করে নিন। চাইলে উপরে রুপোর তবক, কেশর বা পেস্তা বাদামের টুকরো ছড়িয়ে দিতে পারেন।
কালাকাঁদ খেতে যেমন সুস্বাদু, বানানোও তেমনই সহজ। বাড়ির তৈরি এই মিষ্টি কোনো দোকানের মিষ্টির সাথে তুলনা চলে না। তাই দেরি না করে আজই বানিয়ে ফেলুন কালাকাঁদ!