১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবনে আচমকা উপস্থিত হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতিবাদে তাঁরা সেখানে ধর্নায় বসেছেন। মমতার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার।
মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছানোর পর ধর্নাস্থলে বিচারের দাবিতে স্লোগান ওঠে। বেশ কিছুক্ষণ মাইক হাতে দাঁড়িয়ে থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য শুরু করতে পারলেন না। ধর্নাস্থলে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী সকলের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছিলেন যেন তাঁকে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেও আমি এখানে এসেছি। আপনারা যে আন্দোলন করছেন, তার জন্য আমি আপনাদের সম্মান জানাচ্ছি। ছাত্র আন্দোলন থেকে আমি উঠে এসেছি। গতকাল ঝড়জল হয়েছে, আপনাদের অবস্থান দেখে আমার কষ্ট হচ্ছে। ৩৪ দিন ধরে আপনাদের বসে থাকতে হচ্ছে, আমিও রাতের পর রাত ঘুমোইনি। আপনারা রাস্তায় থাকলে আমাকেও জেগে থাকতে হয়।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আপনারা যদি কাজে ফিরতে চান, আমি আপনাদের দাবি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করব। আমি একা সরকার চালাই না, সকলের সঙ্গে আলোচনা করব। যদি কেউ দোষী হন, তাদের শাস্তি হবে। সিবিআইকে অনুরোধ করব, দোষীদের শাস্তি হোক।”
তিনি জানান, “আপনারা আমাদের পরিবারের সদস্য। আমি অবিচার হতে দেব না। সমস্ত হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি নতুন করে গঠিত হবে, যাতে জুনিয়র ডাক্তার, সিনিয়র ডাক্তার, নার্স ও পুলিশ সদস্যরা থাকবে। আরজি করের রোগী কল্যাণ সমিতি আমি ভেঙে দিয়েছি। নতুন করে তৈরি হবে। বাকি দাবিগুলি যদি সত্যিই কেউ দোষী হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, “সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা চলছে। আপনাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ করা হবে না। এখানে আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আসিনি, আন্দোলনের সমব্যথী হিসেবে এসেছি। আমি আপনাদের বড় দিদি, আমাকে সময় দিন। ভালো থাকুন।”
তিনি ধর্নামঞ্চে আন্দোলনকারীদের খাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। বলেন, “আপনাদের কাছে আসা মানে নিজেকে ছোট করা নয়, বরং বড় করা। এটি আমার শেষ চেষ্টা।”
জুনিয়র ডাক্তাররা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বৃহস্পতিবার তাঁদের প্রতিনিধিদের নবান্নে ডাকা হলেও বৈঠকটি ভেস্তে যায়। ৩২ জন ডাক্তার সেখানে গিয়েছিলেন, কিন্তু সরাসরি সম্প্রচারের দাবি মেনে নেয়নি সরকার। সে দিন মুখ্যমন্ত্রী দুই ঘণ্টার বেশি সময় সেখানে ছিলেন। পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টে মামলার কারণে সরাসরি সম্প্রচার সম্ভব নয়।