৫ সেপ্টেম্বর, কলকাতাঃ আর জি কর মেডিকেল কলেজের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে প্রবল বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের নানা প্রান্তেও চলছে আন্দোলন। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও, সেদিন বিচারপতির বেঞ্চ বসবে না। এর মধ্যে, বুধবার রাতে রাজ্য জুড়ে ফের গণআন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং মানববন্ধনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।


প্রতিদিনই আরজি কর-কাণ্ডের বিরুদ্ধে নতুন নতুন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে। জুনিয়র ডাক্তাররা প্রতিবাদে পথে নেমেছেন, এবং আরজি কর মেডিকেল কলেজের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালাচ্ছেন। সাধারণ মানুষও তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্য ভবন থেকে লালবাজার পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বও তাঁদের সমর্থন জানিয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। বুধবার রাত ৯টায় আরজি করের সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে এক ঘণ্টার প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ডাক দেওয়া হয়েছে। শুধু আরজি করেই নয়, কলকাতার অন্যান্য হাসপাতালের সামনেও একই ধরণের প্রতিবাদ হবে।


এই বিক্ষোভ শহরের গণ্ডি ছাড়িয়ে মফস্সলে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা থেকেই মোমবাতি ও প্রদীপ দিয়ে সাজানো হচ্ছে আরজি করের প্ল্যাটিনাম ভবনের সামনের এলাকা। হাতে লেখা পোস্টার এবং ফেস্টুনে একটাই দাবি, ‘আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চাই’ এবং ‘দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে’। হাওড়া, হুগলি সহ বিভিন্ন অঞ্চলে কোচিং সেন্টার ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো সন্ধ্যার পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিউ টাউনের তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা বুধবার সন্ধ্যায় মিছিল করেন, যাদবপুরেও প্রতিবাদকারীরা জমায়েত করেছেন। শহরের নানা প্রান্তে মিছিল, পথনাটিকা ও জমায়েতের আয়োজন করা হয়েছে।


প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘিরে কলকাতা জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ বিভিন্ন হাসপাতালে জমায়েতস্থলে পুলিশ পিকেট বসানোর নির্দেশ দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ডিসিদের দায়িত্ব দিয়ে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আরজি করের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে।


উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৪ আগস্ট ‘মেয়েদের রাত দখল’ আন্দোলনে আরজি করের ভেতরে অশান্তির সৃষ্টি হয়, হাসপাতালের ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে এবার কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।