০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪: আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সম্প্রতি কলকাতায় রাতের দখল নিয়েছিলেন নারীরা। এরপরই রাজ্য সরকার মহিলাদের সুরক্ষার জন্য কিছু নতুন নির্দেশনা প্রকাশ করে, যার মধ্যে ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ— মহিলাদের রাতের কাজ থেকে যতটা সম্ভব দূরে রাখা। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক। অনেকে প্রশ্ন তোলেন, রাতের সময় কি মহিলারা কাজ করতে পারবেন না? এই বিতর্কের উত্তরে বাংলার মহিলা নাট্যনির্দেশকেরা এবার মঞ্চে সারা রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রখ্যাত নাট্য নির্দেশক সীমা মুখোপাধ্যায়, বিলু দত্ত, বিমল চক্রবর্তী ও সৌরভ পালোধীর যৌথ উদ্যোগে রাতভর শুধুমাত্র নারীদের নাটক মঞ্চস্থ হবে। এই উদ্যোগের বিষয়ে সীমা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করা হয়েছিল। সেখানেই আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রেক্ষাগৃহ পাওয়া গেলে সারা রাত ধরে মহিলাদের নাটকের আয়োজন করা হবে। আমরা নিজেদের সৃষ্টিশীল কাজের মাধ্যমেই প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছিলাম।”

নাট্যকার সৌরভ পালোধী বলেন, “মহিলাদের রাতে কাজ করার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চলেছে প্রশাসন। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। যে কোনও লিঙ্গের মানুষ যেন যে কোনও সময়ে স্বেচ্ছায় কাজ করতে পারেন, এটাই আমাদের বার্তা। শুধু মঞ্চের উপরে নয়, পর্দার পিছনেও মঞ্চসজ্জা, আলোকসজ্জায় বহু মহিলা যুক্ত থাকেন। রাতের থিয়েটার আগেও হয়েছে, তবে এ বার তা এক বিশেষ প্রতিবাদ হিসেবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।”
অ্যাকাডেমি প্রেক্ষাগৃহের বাইরেও মহিলাদের নাচ, গান এবং মূকাভিনয়ের পরিবেশনা চলবে। নাট্যশিল্পী পৌলমী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সারা রাত ধরে মহিলাদের নেতৃত্বে এই প্রতিবাদ হবে। এর থেকে শক্তিশালী প্রতিবাদ আর কী হতে পারে? এর মাধ্যমে আমরা কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তার দাবিতে আওয়াজ তুলছি এবং সুবিচার দাবি করছি। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব যতক্ষণ না আমাদের দাবি পূরণ হয়।”
শনিবার রাতে সীমা মুখোপাধ্যায়, তূর্ণা দাশ, সঞ্জিতা মুখোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য, পৌলমী চট্টোপাধ্যায়, ন্যান্সি ও প্রান্তিক চৌধুরীর নির্দেশনায় ছয়টি নাটক মঞ্চস্থ হবে। রাত ১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত চলবে এই বিশেষ নাট্য অনুষ্ঠান।