ফ্যাশন আর গ্রাফিতি: শিল্পের দুটি দিক

ফ্যাশন আর গ্রাফিতি: শিল্পের দুটি দিক
A model parades Marvel Comics inspired apparel during the Berserkergang Summer 2012/13 show by 'Romance Was Born' at Fashion Week Australia in Sydney on April 30, 2012. The annual event showcases over 75 collections by renowned Australian and Asian designers. AFP PHOTO / Torsten BLACKWOOD (Photo credit should read TORSTEN BLACKWOOD/AFP/GettyImages)

ফ্যাশন শিল্পেরই অংশ হিসেবে গ্রাফিতি আমাদের সামনে আসে। দেয়ালে আঁকা বা লেখাকে বলা হয় গ্রাফিতি, যা শুধু ছবি নয়, প্রতিবাদের এক শক্তিশালী মাধ্যম। মার্কার পেইন্ট, অ্যাক্রেলিক রং বা স্প্রে পেইন্টের মাধ্যমে গ্রাফিতি করা হয়। সদ্য ঘটে যাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এই শহরের দেয়াল, রাস্তা, দোকানের শাটার, এবং মেট্রোরেলের পিলার জুড়ে অসংখ্য গ্রাফিতি দেখা যাচ্ছে, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিল্পকর্ম। এই আন্দোলনের চিত্রগুলো ফ্যাশনেও প্রভাব ফেলেছে।

গ্রাফিতির ইতিহাস

গ্রাফিতির ইতিহাস বেশ পুরোনো। প্রায় চার হাজার বছর আগে প্রাচীন রোম ও পম্পেই নগরীর সমাধিস্থলের দেয়ালে গ্রাফিতির নমুনা পাওয়া যায়। আধুনিক গ্রাফিতি এসেছে হিপহপ সংস্কৃতি থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক ও ফিলাডেলফিয়া শহরের দেয়ালে প্রথম গ্রাফিতি নজর কাড়ে।

গ্রাফিতির মূল উপজীব্য

গ্রাফিতি সবসময় রাজনৈতিক হতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য গ্রাফিতি খুব কার্যকর। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় শিল্পী কামরুল হাসানের আঁকা গ্রাফিতি পোস্টারগুলো যেমন ইয়াহিয়া খানের ছবিতে ‘রক্তখেকো’ লেখা ছিল, তা তখন মানুষের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছিল। ২০২৪ সালে জেন-জি প্রজন্মের গ্রাফিতি নতুন অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

ফ্যাশনে গ্রাফিতির উপস্থিতি

ফ্যাশন সবসময় নতুনকে গ্রহণ করে এবং পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেয়। তাই ফ্যাশনে গ্রাফিতি একটি নতুন উদ্ভাবন হিসেবে দেখা দিয়েছে। হিপহপ কালচার থেকে অনুপ্রাণিত এই গ্রাফিতি করা পোশাক জেন-জি প্রজন্মের কাছে বেশ জনপ্রিয়। স্ট্রিট ফ্যাশনে গ্রাফিতি নকশা দাপুটে ভূমিকা রাখছে। এমনকি নিজের সাধারণ টি-শার্টেও স্প্রে পেইন্টে রাঙিয়ে গ্রাফিতি আঁকছে অনেকেই।

গ্রাফিতি ফ্যাশনের রূপ

গ্রাফিতি ফ্যাশন মানুষের জন্য একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। মানবতা ও প্রতিবাদের কথা বলার পাশাপাশি এটি সঞ্চার করে হাস্যরসেরও। পোশাকে গ্রাফিতি হতে পারে স্ক্রিনপ্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, হ্যান্ডপ্রিন্ট ইত্যাদি মাধ্যমে। ২০১৫ সালে মার্কিন গায়িকা কেটি পেরির মেটবল লুকে মশিনো গাউনের গ্রাফিতি নকশা প্রথম হেডলাইন করে। হ্যাশট্যাগমিটু আন্দোলনের সময়ও গ্রাফিতি নানা ভাবে ছিল, যা কেবল প্ল্যাকার্ডে নয়, পোশাকেও ছিল।

বলিউড ও গ্রাফিতি

গ্রাফিতি হলিউডের মতো বলিউডেও প্রবেশ করেছে। অক্ষয় কুমার, টাইগার শ্রফ থেকে রণবীর সিং, সবার পোশাকে গ্রাফিতি নকশা দেখা যায়। মালাইকা অরোরা তাঁর ক্রিসমাস লুকে একটি লাল-সাদা জাইলস ডিকন গাউনে গ্রাফিতি নকশা নিয়ে হাজির হন। সারা আলী খান তাঁর সিনেমার প্রচারণায় একটি সাদা-কালো ডলচে অ্যান্ড গাবানা গ্রাফিতি ড্রেসে নজর কাড়েন।

গ্রাফিতি: প্রতিবাদ থেকে পরিণয়

আম্বানি পরিবারের প্রি-ওয়েডিং ইভেন্টে রাধিকা মার্চেন্ট গ্রাফিতি করা একটি গাউন বেছে নেন, যা তাঁর হবু বর অনন্ত আম্বানির প্রথম প্রেমপত্রের গ্রাফিতি। ডিজাইনার জাস্টিন অ্যালেক্সান্ডারও নিয়ে এসেছেন গ্রাফিতি নকশা করা বিয়ের গাউন। এভাবেই গ্রাফিতি প্রতিবাদ থেকে পরিণয়, সব প্রকাশের মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
আরও পড়ুন
error: Content is protected !!