ক্রিয়েটিনিন হল একটি বাইপ্রোডাক্ট যা মাংসপেশিতে ক্রিয়েটিনের বিপাকজনিত প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন হয়। এটি রক্তের মাধ্যমে কিডনির মাধ্যমে ছাঁটাই হয়। সাধারণত, সুস্থ কিডনি রক্ত থেকে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এই কারণে, ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা সাধারণত কিডনির কার্যকারিতা বা স্বাস্থ্য নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
ক্রিয়েটিনিন বেশি হলে কি কি শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়?

যখন ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা স্বাভাবিক সীমার উপরে চলে যায়, তখন এটি কিছু শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যেমন:
- কিডনি সমস্যা: উচ্চ ক্রিয়েটিনিন স্তর কিডনির অসুস্থতার সূচক হতে পারে, যেমন কিডনি ফেইলিউর বা ক্রনিক কিডনি ডিজিজ।
- বুকের ব্যথা: উচ্চ ক্রিয়েটিনিন স্তর হৃদপিণ্ডের সমস্যা বা হাইপারটেনশনের কারণ হতে পারে।
- সোডিয়াম ও পানির ভারসাম্যহীনতা: এটি শরীরে সোডিয়াম এবং জলের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করতে পারে, ফলে পায়ে এবং পেটে ফোলা দেখা দিতে পারে।
- মাথাব্যথা ও ক্লান্তি: উচ্চ ক্রিয়েটিনিন স্তর মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহকে প্রভাবিত করতে পারে, ফলে মাথাব্যথা, ক্লান্তি, এবং মনোযোগের অভাব দেখা দিতে পারে।
- মাংশপেশীর দুর্বলতা: ক্রিয়েটিনিনের উচ্চ স্তর পেশীর দুর্বলতা এবং কষ্ট সৃষ্টি করতে পারে।
কিডনি ভাল রাখতে কি কি নিয়ম মেনে চলা উচিত?
কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করতে কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন:
- পর্যাপ্ত জল পান করা: দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস জল পান করুন। জল শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে।
- সুস্থ খাদ্যাভ্যাস: তাজা ফল, সবজি, হোল গ্রেইনস এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। ফাস্ট ফুড, সোডা এবং অধিক নুনযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা কিডনির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ওজন কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করুন। এটি হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: রক্তচাপ, রক্তের চিনি এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত।
- মদ্যপান ও ধূমপান পরিহার: মদ্যপান এবং ধূমপান কিডনির স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- মেডিকেশন সাবধানতার সঙ্গে গ্রহণ: কিছু ওষুধ কিডনির কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
উপসংহার
ক্রিয়েটিনিন এবং কিডনির স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুস্থ খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপন পদ্ধতির মাধ্যমে কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব। যদি আপনার ক্রিয়েটিনিন স্তর বেড়ে যায়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
Post Views: 36