ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লাহ আলি খামেনির স্বাস্থ্যের অবনতি নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। ৮৫ বছর বয়সী এই ধর্মীয় নেতার কোমায় থাকা বা মৃত্যুর গুজব সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এই দাবিগুলি এখনও নিশ্চিত নয় এবং সরকারি কোনো সূত্র থেকে তা স্বীকৃত হয়নি।
খামেনির ছবি প্রকাশ, তবুও গুজব থামছে না
ইরানের পক্ষ থেকে এই গুজব সম্পর্কে সরাসরি কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে খামেনি নিজে একটি ছবি প্রকাশ করেছেন, যেখানে তাকে একজন ইরানি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। এই প্রচেষ্টা জল্পনা কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম Ynet News, ইরান ইন্টারন্যাশনালের বরাতে জানিয়েছে যে খামেনি গুরুতর অসুস্থ। নিউ ইয়র্ক টাইমস-ও একই তথ্য দিয়েছে যে সুপ্রিম লিডার “গুরুতর অসুস্থ”।
ভুল তথ্যের মিশ্রণ
মিথ্যা তথ্য নিয়ে গবেষক তাল হাগিন জানিয়েছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবি আসলে ২০১৪ সালের। এটি বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংশয় আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ইরানি সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত বা অস্বীকার না করায়, এই গুজব ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন
খামেনির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার উত্তরসূরি নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে। Ynet News-এর বরাতে জানা গিয়েছে যে, খামেনি ইতিমধ্যে তার দ্বিতীয় ছেলে মুজতবা খামেনিকে উত্তরসূরি হিসেবে মনোনীত করেছেন।
খবরে বলা হয়েছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ইরানের অ্যাসেম্বলি অফ এক্সপার্টস-এর একটি গোপন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৬০ সদস্যের এই পরিষদকে জরুরি বৈঠকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন খামেনি। সেখানে দ্রুত উত্তরসূরি নির্বাচন করতে বলা হয়।
তবে, এই প্রক্রিয়া সহজ ছিল না। কিছু সদস্য এই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত এবং মুজতবার নির্বাচনের বিরোধিতা করেন। কিন্তু খামেনি এবং তার প্রতিনিধিদের চাপে, এমনকি হুমকির মুখেও, শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মতিক্রমে মুজতবার নামই চূড়ান্ত করা হয়।
ইরানের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়
এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত না হলেও, যদি এই গুজব সত্য হয়, তবে এটি ইরানের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে। তবে সুপ্রিম লিডারের স্বাস্থ্যের অবস্থা কিংবা মুজতবা খামেনির উত্তরসূরি নির্বাচনের বিষয়ে ইরানি সরকার এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য দেয়নি।