পৌষ মাসের কৃষ্ণপক্ষের শেষ দিনে পৌষ অমাবস্যা পালিত হয়। এই দিনটি ধর্মীয়ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে বিভিন্ন পূজা, উপবাস এবং বিশেষ আচার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পৌষ অমাবস্যা উপলক্ষে পিতৃতপস্যা বা তপনের মাধ্যমে পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। সেই সঙ্গে, পিতৃদোষ এবং কালসার্পদোষ মুক্তির জন্য উপবাসও করা হয়। এই দিনে সূর্যদেবের পূজা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়।
পৌষ অমাবস্যা উপবাস ও ধর্মীয় আচরণ
পৌষ মাসের অমাবস্যায় ধর্মীয় তন্ত্র-সাধনা ও আত্মিক উন্নতির জন্য কিছু বিশেষ উপবাস ও আচার অনুষ্ঠান করা হয়। সেগুলি হলো:
- পিতৃ তপন: পৌষ অমাবস্যার দিন পবিত্র নদী বা জলাশয়ে স্নান করে পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি কামনা করে তপন (অর্ঘ্য দান) করা হয়। এর পর সূর্যদেবকে জল নিবেদন করা হয়।
- সূর্য পূজা: একটি তামার বাটিতে বিশুদ্ধ জল নিয়ে তাতে লাল চন্দন ও লাল ফুল দিয়ে সূর্যদেবকে জল নিবেদন করতে হয়।
- উপবাস ও দান: পিতৃ আত্মার শান্তি কামনা ও দান করার জন্য গরিবদের দান করা উচিত।
- পিতৃদোষ ও সান্তা হীন যোগ: যাদের জন্মকুণ্ডলীতে পিতৃদোষ বা সান্তা হীন যোগ রয়েছে, তারা এই দিনে উপবাস করতে পারেন এবং পূর্বপুরুষদের তপন করতে পারেন।
- বেল গাছ ও তুলসী গাছের পূজা: পৌষ অমাবস্যায় বেল গাছের পূজা ও তুলসী গাছের চারিদিকে প্রদক্ষিণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- উপবাসের ফল: পৌষ অমাবস্যায় উপবাস করলে পিতৃ আত্মা শান্তি লাভের পাশাপাশি সকল ইচ্ছার পূর্ণতাও হয়।
পৌষ অমাবস্যার গুরুত্ব
হিন্দুধর্মে পৌষ মাস খুবই ফলপ্রসূ এবং পুণ্যময় বলে বিবেচিত হয়। এই মাসে আধ্যাত্মিক চেতনা অর্জন এবং পূজা-অর্চনা করা অত্যন্ত ফলদায়ক। পৌষ অমাবস্যায় উপবাস করলে শুধুমাত্র পূর্বপুরুষদের আত্মার শান্তি মেলে না, বরং ব্রহ্মা, ইন্দ্র, ভুত, সূর্য, অগ্নি, বায়ু, ঋষি, পাখি এবং প্রাণীদের জন্যও শান্তি অর্জিত হয়। পৌষ মাসের মৌসুমী পরিবর্তনের মাধ্যমে আগামী বছরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও পূর্বানুমান করা যায়।