আমেরিকার শুল্ক-কোপ! বুধবার থেকে ভারতীয় পণ্যে ৫০% কর, রাশিয়া থেকে তেল কেনায় ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত
ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য জগতে বড়সড় ধাক্কা ভারতের জন্য। রাশিয়া থেকে তেল কেনার জেরে ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নিল আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-এর নির্দেশে বুধবার (২৭শে অগস্ট) সকাল ৯টা ৩১ মিনিট (ভারতীয় সময়) থেকে এই শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। ভারতীয় রফতানিকারকদের জন্য বাড়তি করের হার দাঁড়াচ্ছে ৫০ শতাংশ।
কী বলছে মার্কিন প্রশাসন?
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের অধীনে শুল্ক ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ (CBP) সাত পাতার একটি নির্দেশিকা তৈরি করেছে। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ—
- ২৭ অগস্ট রাত ১২টা ১ মিনিট (ইস্টার্ন টাইম) থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর।
- ভারতীয় পণ্য আমেরিকার বাজারে প্রবেশ করার সময় বা গুদাম থেকে বেরোনোর সময় এই শুল্ক বসবে।
- রাশিয়া থেকে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ভারত যে তেল আমদানি করছে, সেটিই এই সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ।
নয়াদিল্লির অবস্থান
ভারত ইতিমধ্যেই একাধিকবার স্পষ্ট করেছে যে, এই শুল্ককে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। নয়াদিল্লি আমেরিকাকে মনে করিয়ে দিয়েছে, তারাও নিজেদের স্বার্থে রাশিয়া থেকে পণ্য কেনে। ফলে ভারতকে একতরফা দায়ী করা উচিত নয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার গুজরাতের এক সভা থেকে বলেন—
“যতই চাপ আসুক না কেন, আমরা তার মোকাবিলা করব। আত্মনির্ভর ভারতের পথে আমরা অনেকটা এগিয়েছি, দেশ আরও শক্তিশালী হয়েছে।”
ভারতের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে?
মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে রফতানিকারকদের উপর বাড়তি শুল্কের প্রভাব নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা যাচ্ছে। কেন্দ্র ইতিমধ্যেই বিকল্প বাজার খুঁজে বের করার এবং দেশীয় উৎপাদনকে বাড়তি জোর দেওয়ার পথে এগোচ্ছে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত?
- আমেরিকা ভারতের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক বাজার।
- বাড়তি ২৫% শুল্ক কার্যকর হলে টেক্সটাইল, ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী, ফার্মাসিউটিক্যালস সহ একাধিক সেক্টরে চাপ বাড়বে।
- রাশিয়া-আমেরিকা ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রভাব এবার সরাসরি ভারতের বাণিজ্যে এসে পড়ছে।
আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ভারতের রফতানিতে বড় ধাক্কা। তবে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, যে কোনও চাপের মোকাবিলা করতেই প্রস্তুত ভারত। এখন দেখার বিষয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এই দ্বন্দ্বে শেষ পর্যন্ত কোন পথে সমাধান খোঁজে দুই দেশ।