দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে বাকি !!

Days
Hours
Minutes
Seconds

জানুন কীভাবে সাইবার অপরাধীরা ট্রু (Truecaller) কলারের সাহায্যে ডিজিটাল গ্রেফতারি ফাঁদ পেতেছে এবং কীভাবে আপনি এই ফাঁদ এড়াতে পারেন।

জানুন কীভাবে সাইবার অপরাধীরা ট্রু (Truecaller) কলারের সাহায্যে ডিজিটাল গ্রেফতারি ফাঁদ পেতেছে এবং কীভাবে আপনি এই ফাঁদ এড়াতে পারেন।

বর্তমানে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য ট্রু কলার একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে অচেনা নম্বরের পরিচয় জানা যায় এবং ফোন কলের সময় পরিচিতির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম হয়ে উঠেছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে ট্রু কলার, এক্ষেত্রে, সবসময় নির্ভুল তথ্য প্রদান করে না। এই অ্যাপের মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা নতুন কৌশলে প্রতারণা করছে, যার ফলে কিছু ব্যবহারকারী ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ নামে এক নতুন ফাঁদে পড়ে টাকা হারাচ্ছে।

ট্রু কলারের সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা

ট্রু কলার অ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি টুল হলেও, এর নির্ভুলতা সবসময় নিশ্চিত নয়। বিশেষ করে সাইবার অপরাধীরা এই অ্যাপের সুবিধা নিয়ে ভুয়া পরিচয় তৈরি করছে এবং মানুষের বিশ্বাস অর্জন করছে। উদাহরণস্বরূপ, একজন সাইবার অপরাধী যদি আইপিএস অফিসারের নাম ব্যবহার করে নিজের পরিচয় গড়ে তোলে, তবে ট্রু কলার সেই নাম প্রদর্শন করবে। এর ফলে, ব্যবহারকারী দ্রুত বিশ্বাস করতে পারে, এবং প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে যেতে পারে।

সাইবার অপরাধীদের নতুন কৌশল: ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’

সম্প্রতি, সাইবার অপরাধীরা একটি নতুন কৌশল ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ চালু করেছে। এর মাধ্যমে, তারা ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তা সেজে মানুষকে ফোন করে গ্রেফতারের ভয় দেখায়। সাধারণত, অপরাধী ফোন করে দাবি করে যে, কোন ব্যক্তি মাদক পাচারের অভিযোগে যুক্ত এবং ডিজিটালি গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে, তারা আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠায় এবং সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ফাঁদে পড়ে যায়।

এই ধরনের প্রতারণায়, victim ব্যক্তিকে ডিজিটালি গ্রেফতার করা হয় বলে মিথ্যে কথা বলে, এবং জামিন পাওয়ার জন্য টাকা দাবি করা হয়। যে ব্যক্তি টাকা দেয়, তার পর আর কোনো যোগাযোগ হয় না, এবং তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়।

‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ এবং ট্রু কলার: সম্পর্ক এবং বিপদ

কিছু সাইবার অপরাধী ‘ট্রু কলার’ এর তথ্যের সাহায্যে ভুয়া পুলিশ অফিসারের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করতে সক্ষম হচ্ছে। যখন ব্যবহারকারী ওই নামটি দেখেন, তখন তারা দ্রুত বিশ্বাস করে এবং ফোন ধরেন। তবে, এই প্রক্রিয়া একেবারেই আইনসঙ্গত নয়। ভারতীয় আইন অনুযায়ী, কাউকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ আধিকারিককে তার সামনে উপস্থিত হতে হয়, এবং কোনও ফোন কল বা ডিজিটাল মাধ্যমে গ্রেফতারি করা যায় না।

সাইবার অপরাধীরা এই অবস্থা কাজে লাগিয়ে, ফোনে পুলিশ সেজে ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ এবং ‘ডিজিটাল জামিন’ এর কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ট্রু কলারের মাধ্যমে সঠিক পরিচয় নিশ্চিত করা সহজ হলেও, এটি কখনও কখনও ভুল তথ্যও প্রদর্শন করতে পারে। এতে, অপরাধীরা আইনি পদক্ষেপের ভয় দেখিয়ে, মানুষকে আর্থিক ক্ষতি করতে পারে।

কীভাবে এই প্রতারণা এড়ানো যাবে?

প্রথমত, অপরিচিত নম্বর বা লিঙ্ক থেকে আসা ফোন কল বা মেসেজে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কোনো অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন আসলে, তার উপর নজর দিন এবং যদি মনে হয় কিছু সন্দেহজনক হতে পারে, তবে কলটি গ্রহণ না করাই ভালো। বিশেষ করে, কোনো ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ বা ‘ডিজিটাল জামিন’ এর কথা শুনলে তা অবিলম্বে উপেক্ষা করুন।

এছাড়াও, যদি আপনি ট্রু কলারে কোনো পরিচয় দেখে থাকেন, তা নিশ্চিত না হলে অন্য সূত্র থেকে যাচাই করুন। অপরিচিত লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে সাবধান থাকুন। অনেক সময় একটি ভুল ক্লিক বিপদ ডেকে আনতে পারে। কখনও ব্যাংক বা পেমেন্ট সম্পর্কিত তথ্য ফোনে শেয়ার করবেন না।

আইনিভাবে কী করা উচিত?

কোনো সন্দেহজনক ফোন কল পেলে বা ডিজিটাল গ্রেফতারির ফাঁদে পড়লে, অবিলম্বে পুলিশকে জানান। পুলিশ আধিকারিকরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন এবং আপনি যদি নির্দোষ হন, তবে আপনি চিন্তা না করে নিরাপদে থাকবেন। আইন অনুযায়ী, ডিজিটাল গ্রেফতারি বা জামিনের কোনো বৈধ ভিত্তি নেই, সুতরাং এসবের উপর ভরসা না করাই ভালো।

সাইবার অপরাধের হাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয়

  • অপরিচিত নম্বর এবং লিঙ্ক থেকে আসা ফোন কল ও মেসেজ এড়িয়ে চলুন।
  • ফোনে স্ক্রীন শেয়ার করতে বললে সতর্ক থাকুন, কারণ এটি ভাইরাস প্রবাহিত করতে পারে।
  • অ্যাপের ভুল তথ্য থেকে সাবধান থাকুন, এবং কোনো অপরিচিত লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।
  • নিজের ডিভাইসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন এবং প্রয়োজনীয় সাইবার সিকিউরিটি সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।

সাইবার অপরাধীদের কৌশল দিন দিন আরও জটিল হচ্ছে এবং তারা ট্রু কলার সহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করছে। তবে, সচেতনতা এবং সাবধানতা অবলম্বন করে আপনি এই ধরনের বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল, এসব সতর্কতা অবলম্বন করা এবং যেকোনো সন্দেহজনক পরিস্থিতি পুলিশকে জানানো।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
আরও পড়ুন
error: Content is protected !!