থাইল্যান্ডের ফুকেটের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ‘টাইগার কিংডম’-এ চরম আতঙ্কের পরিবেশ। এক ভারতীয় পর্যটক সেলফি তুলতে গিয়ে বাঘের হামলার শিকার হয়েছেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ধরা পড়েছে সেই হাড়হিম করা মুহূর্ত।
ঘটনাটি ঘটে ‘টাইগার কিংডম’ নামক একটি চিড়িয়াখানার মতো পার্কে, যেখানে প্রশিক্ষিত বাঘদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ দেওয়া হয় পর্যটকদের। এখানেই এক ভারতীয় পর্যটক একটি পোষা বাঘের পাশে বসে ছবি তুলতে গেলে, আচমকা বাঘটি তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একজন প্রশিক্ষক বাঘটিকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন, ঠিক তখনই পর্যটকটি বাঘের পাশে নীচু হয়ে ছবি তুলতে যান। মুহূর্তেই ঘটে যায় ভয়ঙ্কর সেই আক্রমণ। উপস্থিত দর্শনার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সিদ্ধার্থ শুক্ল নামে এক ব্যক্তি। এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ এই ভিডিও পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে তা ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটির ভিউ ইতিমধ্যেই ২ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “থাইল্যান্ডের টাইগার কিংডমে বাঘের হামলায় আক্রান্ত এক ভারতীয় পর্যটক। এমন জায়গায় মানুষ বাঘদের পোষা প্রাণীর মতো আচরণ করে, যার ফলাফল ভয়ঙ্কর হতে পারে।”
Apparently an Indian man attacked by a tiger in Thailand.
— Sidharth Shukla (@sidhshuk) May 29, 2025
This is one of those paces where they keep tigers like pets and people can take selfies, feed them etc etc.#Indians #tigers #thailand #AnimalAbuse pic.twitter.com/7Scx5eOSB4
সৌভাগ্যবশত, ওই পর্যটক বড়সড় আঘাত না পেয়ে শুধুমাত্র ‘মাইনর ইনজুরি’ নিয়ে রক্ষা পান। তবে এই ঘটনাটি ফের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে বন্যপ্রাণীদের সঙ্গে মানুষের অত্যাধিক ঘনিষ্ঠতার বিপদকে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া:
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করেন।
একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, “বন্যপ্রাণীকে সম্মান করা উচিত, তাদের সঙ্গে সেলফি তুলতে গিয়ে জীবন ঝুঁকিতে ফেলাটা একেবারেই বোকামি।”
আরেকজন লেখেন, “এই ধরনের ভ্রমণ দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। উত্তেজনাময় মূহূর্তই হতে পারে জীবনের শেষ মুহূর্ত।”
বিশেষজ্ঞদের হুঁশিয়ারি:
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বহুদিন ধরেই এই ধরণের পার্ক ও মানুষের ‘বন্যপ্রাণী দর্শনের’ পদ্ধতির তীব্র সমালোচনা করে আসছেন। তাঁদের মতে, বাঘের মতো প্রাণীকে বন্দি করে রেখে মানুষের সঙ্গে ছবি তোলার মতো কৃত্রিম আচরণ ও চাপ তাদের মধ্যে বন্য প্রবৃত্তি বাড়িয়ে দেয়, যা থেকে বড় বিপদ তৈরি হতে পারে।
ফুকেটের এই ঘটনা ফের প্রমাণ করল, বন্যপ্রাণীদের ‘পোষ্য’ ভাবার প্রবণতা শুধু ভুল নয়, মারাত্মক বিপজ্জনকও বটে। এখন সময় এসেছে আন্তর্জাতিকভাবে বন্যপ্রাণী-ভিত্তিক পর্যটন ব্যবস্থায় কঠোর নীতি ও সচেতনতা আনার।