মহাকাশে নয় মাস কাটিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসা সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরের সামনে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ — পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া। মহাকাশে দীর্ঘদিন থাকার ফলে তাঁদের শরীরে নানা শারীরিক পরিবর্তন হয়েছে, যা এখন আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য চলছে বিশেষ চিকিৎসা ও প্রশিক্ষণ।
The most beautiful footage you’ll see today! All four astronauts have safely returned to Earth. ❤️ pic.twitter.com/y9hciZQvkO
— DogeDesigner (@cb_doge) March 18, 2025
কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এই ‘পুনর্বাসন’?
মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় শরীরের অনেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর সরাসরি প্রভাব পড়ে। যেমন:
- পেশি ও হাড়ের ক্ষয়
- দৃষ্টিশক্তির দুর্বলতা
- ভারসাম্য রক্ষা করতে সমস্যা
- সহনশীলতার অভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, মহাকাশে থাকার সময় শরীর একটি নতুন অভ্যস্ততায় চলে যায়, যা পৃথিবীতে ফিরে এলে সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই, নভশ্চরদের জন্য ৪৫ দিনের একটি পুনর্বাসন কর্মসূচি তৈরি করেছে নাসা।
সুনীতাদের জন্য কী কী করা হচ্ছে?
নাসার হিউস্টন জনসন স্পেস সেন্টারের ক্রু-কোয়ার্টারে থাকছেন তাঁরা। এই সময়ে প্রতিদিন চলে বিশেষ অনুশীলন ও পরীক্ষামূলক চিকিৎসা। কর্মসূচিটি ভাগ করা হয়েছে তিনটি ধাপে—
🔹 প্রথম ধাপ:
অ্যাম্বুলেশন (চলাফেরার সক্ষমতা), নমনীয়তা এবং পেশিশক্তি পুনরুদ্ধার।
🔹 দ্বিতীয় ধাপ:
নির্দিষ্ট ব্যায়াম ও ফিজিওথেরাপি।
🔹 তৃতীয় ধাপ:
দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক বিকাশ পর্যবেক্ষণ। নিয়মিত রিপোর্ট লিপিবদ্ধ করে চিকিৎসা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়।
মন ভালো রাখাও জরুরি
শুধু শারীরিক নয়, মানসিক সুস্থতাও এই প্রক্রিয়ার একটি বড় দিক। সুনীতাদের জন্য আয়োজন করা হচ্ছে বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যকলাপ, যাতে মন প্রফুল্ল থাকে এবং পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
পৃথিবীতে পা রেখেই হাসিমুখে দুই নভশ্চর
স্পেসএক্সের ক্যাপসুলে চড়ে সফলভাবে ফিরে আসেন সুনীতা ও বুচ। ভারতীয় সময় ভোর ৩:২৭ মিনিটে তাঁরা ফ্লোরিডা উপকূলে সমুদ্রে অবতরণ করেন। এরপর মার্কিন নৌবাহিনীর সহায়তায় তাঁদের আনা হয় স্থলভাগে।

শেষকথা:
নভশ্চরদের জন্য পৃথিবীতে ফেরার পর নতুন করে জীবন শুরু করাটা সহজ নয়। তবে সুনীতাদের মতো অভিজ্ঞ মহাকাশচারীরা জানেন কীভাবে প্রতিকূলতাকে জয় করতে হয়। তাঁদের এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুধু বিজ্ঞান নয়, মানুষের সহনশীলতারও এক অনন্য উদাহরণ।
আরও পরুনঃ সুনীতা উইলিয়ামসের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন