বিশ্ব সংবাদ | ১৮ মার্চ, ২০২৫
নয় মাস পর অবশেষে পৃথিবীর পথে ফিরছেন সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) থেকে ড্রাগন স্পেসক্রাফট ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং তারা বর্তমানে পৃথিবীতে ফেরার ১৭ ঘণ্টার যাত্রাপথে রয়েছে। নাসা জানিয়েছে, ভারতীয় সময় অনুযায়ী সকাল ১০:৩৫ মিনিটে ক্রু-৯ সফলভাবে আইএসএস থেকে আলাদা হয়েছে।
এই ঐতিহাসিক অভিযানে ড্রাগন স্পেসক্রাফটের মাধ্যমে ফেরানো হচ্ছে মোট চারজন মহাকাশচারীকে— সুনীতা উইলিয়ামস, বুচ উইলমোর, নাসার নিক হ্যাগ এবং রোসকসমস কসমোনট আলেকজান্ডার গর্বুনভ।

নয় মাসের অনাকাঙ্ক্ষিত অপেক্ষা
গত বছরের ৫ই জুন বোয়িং স্টারলাইনারের প্রথম মানববাহী মিশনে মাত্র আট দিনের পরিকল্পনায় মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল সুনীতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে। কিন্তু স্টারলাইনার ক্যাপসুলে প্রপালশন সমস্যা ধরা পড়ায় এটি অযোগ্য ঘোষণা করা হয় এবং সেপ্টেম্বর মাসে এটি মানবহীন অবস্থায় পৃথিবীতে ফিরে আসে। ফলে সুনীতা ও বুচকে দীর্ঘ নয় মাস স্টেশনে থাকতে হয়।
স্পেসএক্সের মাধ্যমে রক্ষা অভিযান
নাসা পরে তাদের ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দেয় এলন মাস্কের স্পেসএক্সকে। গত সপ্তাহে ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে ড্রাগন স্পেসক্রাফট পাঠানো হয় যা রবিবার মহাকাশ স্টেশনে পৌঁছে যায়। অবশেষে মঙ্গলবার এই মিশন সফলভাবে শুরু হয় ফেরার পথে।
ক্রু-৯-এর সদস্য নিক হ্যাগ বলেন, “যারা স্টেশনে থাকছেন— আমরা আপনাদের অপেক্ষায় থাকবো। ক্রু-৯ এবার ঘরে ফিরছে।”

সাগরে অবতরণ ও পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা
প্রায় ১৭ ঘণ্টার যাত্রা শেষে ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার ভোর ৩:২৭ মিনিটে ফ্লোরিডা উপকূলে সাগরে স্প্ল্যাশডাউন করবে ক্যাপসুলটি। এরপর একটি রিকভারি ভেসেল তাদের উদ্ধার করবে।
দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশযাত্রার প্রভাব ও মানবিকতা
এই দীর্ঘ মিশন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘতম মিশনের ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। আগে সর্বোচ্চ সময় কাটিয়েছেন ফ্রাঙ্ক রুবিও, যিনি ৩৭১ দিন মহাকাশে ছিলেন। বিশ্বরেকর্ডটি রাশিয়ান কসমোনট ভ্যালেরি পলিয়াকভের, যিনি ৪৩৭ দিন ছিলেন মির স্টেশনে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদে মহাকাশে থাকার ফলে শরীরের মাংসপেশি ও হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে, এছাড়াও শরীরের তরল পদার্থের পরিবর্তন ঘটে। মনোবিজ্ঞানীরা সুনীতা ও বুচের মানসিক দৃঢ়তা ও ধৈর্যকে প্রশংসা করেছেন।