Ad_vid_720X90 (1)
Advertisment
এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল ২৬ হাজার চাকরি, তিন মাসে নতুন নিয়োগের নির্দেশ

এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল ২৬ হাজার চাকরি, তিন মাসে নতুন নিয়োগের নির্দেশ

সুপ্রিম কোর্টের চাঞ্চল্যকর রায়ে বাতিল হল ২০১৬ সালের এসএসসি শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্যানেল। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ বুধবার জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক কারচুপি হয়েছে এবং তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ২৫,৭৫২ জনের চাকরি বাতিল হয়ে গেল। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কারচুপি ও দুর্নীতি

২০১৬ সালের এসএসসি-র শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। আদালত জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা যায়নি। এমনকি, আসল ওএমআর শিট উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সিবিআই-এর তদন্তে উঠে আসে, অনেক প্রার্থী সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি পেয়েছেন। তাই নিয়োগের প্যানেল বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।

পুরনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ার সুযোগ

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, যাঁরা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে এসএসসি মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছিলেন, তাঁরা পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন। তবে যাঁরা ২০১৬ সালের নিয়োগের মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার সুযোগ থাকবে।

নতুন পরীক্ষার প্রস্তাব

নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া কতটা কঠিন হবে, তা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি খন্না। মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, অনেকেই আবেদন না করেও চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। সেই কারণে নতুন পরীক্ষার প্রস্তাব করা হয়।

রাজ্যের আপত্তি ও সিবিআই-এর মত

রাজ্য সরকারের দাবি, এত শিক্ষক চাকরি হারালে শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে। তবে সিবিআই-এর মতে, এসএসসি-র নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। আদালত এই যুক্তিকে মান্যতা দিয়ে হাই কোর্টের রায় বহাল রাখে।

হাই কোর্টের আগের রায়

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিলের রায়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে। যারা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।

কী বলছে শিক্ষাব্যবস্থা?

শিক্ষক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকে মনে করছেন, যোগ্য প্রার্থীদের প্রতি অবিচার হয়েছে। অন্যদিকে, দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়োগ বাতিল করায় অনেকে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

শেষকথা

সুপ্রিম কোর্টের এই রায় পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধাক্কা। যদিও দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়োগ বাতিল হওয়ায় অনেকেই স্বস্তি পেয়েছেন, তবে তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা রাজ্যের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন দেখার, কত দ্রুত এবং সঠিকভাবে এই সমস্যা সমাধান করা হয়।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!