শ্রাবণ পুত্রদা একাদশী ২০২৫ – ব্রত সময় ও পারণ তিথি (Kolkata অনুযায়ী):
🔹 একাদশী তারিখ:
৫ই অগাস্ট, ২০২৫ (মঙ্গলবার)
🔹 দ্বাদশী পারণ সময় (পরের দিন):
৬ই অগাস্ট, ২০২৫ (বুধবার)
পারণ শুরু: সকাল ৫:০৯:৪১
পারণ শেষ: সকাল ৭:৪৬:৪৩
স্থিতিকাল: ২ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট
শ্রাবণ পুত্রদা একাদশী কী এবং কেন পালন করা হয়?
হিন্দু ধর্মে একাদশীর দিন ব্রত রাখা অত্যন্ত পবিত্র ও মহৎ কর্ম বলে বিবেচিত হয়। শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীকে বলা হয় শ্রাবণ পুত্রদা একাদশী, যার অর্থ “সন্তান দানকারী একাদশী”। বিশ্বাস করা হয়, এই ব্রত পালনে পুত্র প্রাপ্তির আশীর্বাদ মেলে এবং পুণ্য লাভের মাধ্যমে পাপমোচন ঘটে।
🪔 শ্রাবণ পুত্রদা একাদশী ব্রত ও পূজা বিধি:
✅ সূর্যোদয়ের আগে পবিত্র স্নান গ্রহণ করুন ও পরিষ্কার পোশাক পরুন।
✅ ভগবান বিষ্ণুর মূর্তির সামনে ঘি-এর প্রদীপ জ্বালান।
✅ তুলসী পাতা, মৌসুমি ফল ও তিল দিয়ে পূজা করুন।
✅ সারাদিন উপবাস করুন। সন্ধ্যায় পূজা সেরে ফল গ্রহণ করতে পারেন।
✅ বিষ্ণু সাহস্রনাম পাঠ করলে বিষ্ণু ভগবানের বিশেষ কৃপা লাভ হয়।
✅ রাতে জাগরণ, ভজন-কীর্তনের আয়োজন করুন।
✅ পরদিন দ্বাদশীতে ব্রাহ্মণকে আহার করিয়ে দান করুন ও তারপর নিজে আহার করুন।
এই ব্রতের মাহাত্ম্য:
🔹 সন্তান লাভের আশীর্বাদ:
যেসব দম্পতি বহু বছর ধরে সন্তানলাভে ব্যর্থ, তারা এই দিন নিষ্ঠাভরে উপবাস পালন করলে সন্তান লাভের সম্ভাবনা থাকে।
🔹 পাপমোচন ও মোক্ষলাভ:
শাস্ত্র মতে, এই ব্রত পালনে পূর্বজন্মের পাপ দূর হয় ও আত্মার মুক্তি ঘটে।
শ্রাবণ পুত্রদা একাদশীর ব্রতকথা:
পদ্ম পুরাণ অনুসারে, দ্বাপর যুগে মহিষ্মতী পুরীর মহীজিত নামক এক ধর্মপরায়ণ রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন পুত্রহীন। রাজ্যের মন্ত্রীরা মহামুনি লোমেশের কাছে রাজাকে নিয়ে যান। মুনি জানালেন—রাজা তার পূর্বজন্মে একজন লোভী ব্যাবসায়ী ছিলেন। একদিন এক গরম দুপুরে এক পিপাসার্ত গাভীকে ঠেলে নিজে জল পান করেছিলেন, যা ছিল অধর্মের কাজ।
এই পাপের ফলস্বরূপ বর্তমান জন্মে পুত্রহীন হয়েছেন। তবে যদি তিনি ও তার রাজ্যবাসীরা শ্রাবণ পুত্রদা একাদশীর ব্রত পালন করেন, তবে নিশ্চয়ই পুত্র রত্ন লাভ করবেন। তারা ব্রত পালন করেন ও ফলস্বরূপ রাজা এক গুণী পুত্রের পিতা হন। সেই থেকে এই একাদশী ‘পুত্রদা একাদশী’ নামে পরিচিত।