বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শাস্তি ঘোষণা করল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদালত অবমাননার মামলায় তাঁকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার এই নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের বেঞ্চ। বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন এই বেঞ্চে আরও ছিলেন বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বিচারপতিরা রায়ে জানিয়েছেন, আদালতের মর্যাদা রক্ষায় এমন রায় অপরিহার্য ছিল। এই মামলায় অপর অভিযুক্ত ছিলেন গোবিন্দগঞ্জের বাসিন্দা শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মহম্মদ শাকিল আলম। তাঁকেও আদালত অবমাননার দায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
ভারতের আশ্রয়ে হাসিনা
গত বছরের ৫ অগস্ট, দেশের অভ্যন্তরে তীব্র গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছিলেন শেখ হাসিনা। তারপরেই তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে চলে আসেন ভারতে। বর্তমানে তিনি ভারতেই রয়েছেন। ঢাকার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নয়াদিল্লির সঙ্গে হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলার বিচার চলছে। অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি বিরোধীদের দমন করতে বলপ্রয়োগ করেছিলেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিলেন। সেই মামলাগুলিরই একটি ছিল আদালত অবমাননা সংক্রান্ত।
ক্ষমতায় অন্তর্বর্তী সরকার
শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের ক্ষমতায় এসেছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাঁদের মূল লক্ষ্য দেশের প্রশাসনিক সংস্কার ও ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে সাধারণ নির্বাচন আয়োজন। যদিও বিএনপি-সহ বিরোধীরা নির্বাচন দ্রুত করানোর দাবি তুলেছে।
এদিকে হাসিনার বিরুদ্ধে চলা মামলাগুলি রাজনৈতিক মহলে প্রবল আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মামলাগুলির রায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
আদালত অবমাননার মামলায় শেখ হাসিনার কারাদণ্ডের এই রায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় মাপের ঘটনা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, যিনি এক দশকের বেশি সময় দেশ শাসন করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে এই রায় বর্তমান রাজনৈতিক পটভূমিতে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আগামী দিনে তাঁর ভবিষ্যৎ কী হবে, সেই দিকে তাকিয়ে দেশবাসী।