Ad_vid_720X90 (1)
Advertisment
শান্তিনিকেতনের কাছে ‘বাহা উৎসব’ ও ‘বসন্ত বরণ’—প্রকৃতির কোলে অন্যরকম বর্ষবরণ

শান্তিনিকেতনের কাছে ‘বাহা উৎসব’ ও ‘বসন্ত বরণ’—প্রকৃতির কোলে অন্যরকম বর্ষবরণ

শান্তিনিকেতন নিউজ ডেস্ক:
শান্তিনিকেতনের সোনাঝুড়ির জঙ্গলে যখন বসন্ত উৎসবের ভিড়ে তিল ধারণের ঠাঁই নেই, তখনই এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা দিল শান্তিনিকেতনের অদূরে আয়োজিত ‘বাহা উৎসব’ ও ‘বসন্ত বরণ’ অনুষ্ঠান। প্রকৃতির মাঝে, রঙ, গন্ধ আর সুরের এক অপূর্ব মেলবন্ধনে পালিত হলো এই অনন্য বর্ষবরণ উৎসব।

বসন্ত পূর্ণিমার দিনে প্রকৃতিকে ভালোবেসে অন্যরকম বর্ষবরণ

আজ বসন্ত পূর্ণিমা, সকাল থেকেই বোলপুরের মুলুকে স্বাধীন ক্যাম্পাসে বেজে উঠেছে রবীন্দ্রসঙ্গীত ও মাদলের তালে। নেচে উঠেছে গোটা এলাকা। গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে শহুরে মানুষ—সকলেই মিলেছেন উৎসবের আনন্দে।
এই আয়োজনে শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং পজিটিভ বার্তার যৌথ উদ্যোগে সহায়তা করেছে স্বাধীন ট্রাস্ট, ওয়েস্ট বেঙ্গল মিডিয়া ফোরাম, অল বেঙ্গল প্রাইভেট নার্সিং হোমস অ্যান্ড হসপিটালস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন

শান্তিনিকেতনের কাছে ‘বাহা উৎসব’ ও ‘বসন্ত বরণ’—প্রকৃতির কোলে অন্যরকম বর্ষবরণ

বাহা উৎসব: ফুলে-ফুলে প্রকৃতিকে কৃতজ্ঞতা

আদিবাসী সমাজের এই ‘বাহা উৎসব’ (ফুলের উৎসব) প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার প্রতীক। শাল ফুল, নতুন শালপাতা ও জল দিয়ে তাঁরা দেবতার কাছে নিবেদন করেন এবং প্রকৃতির ঋণ স্বীকার করেন। এই উৎসবের পরেই আদিবাসীরা নতুন ফুল, ফল ও পাতা নিজেদের জীবনে গ্রহণ করেন।

শান্তিনিকেতনের কাছে ‘বাহা উৎসব’ ও ‘বসন্ত বরণ’—প্রকৃতির কোলে অন্যরকম বর্ষবরণ

ঐতিহ্য, পরিবেশ ও সমাজের সংযোগ

এই উৎসব কেবল সৌন্দর্য আর রঙের নয়, এটি আদিবাসী সংস্কৃতি ও ধর্মীয় চেতনার অন্যতম স্তম্ভ। সংগীতশিল্পী রথীন কিস্কু বলেন, “এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই এবং সমাজের সব মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে উদযাপন করি।”

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশেষ সম্মাননা প্রদান

এই দিনে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন স্থানীয় শিল্পীরা। পাশাপাশি আদিবাসী ধর্মীয় প্রতিনিধিদের ও অন্যান্য বিশিষ্টজনকে সম্মানিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—প্রাক্তন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা ডাঃ সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজের ডিন ডাঃ অয়ন গোস্বামী, মিডিয়া ফোরামের নির্জন নন্দী, শিক্ষাবিদ কানন হাঁসদা সহ আরও অনেকে।

উৎসবের বার্তা: সৌহার্দ্য ও সাম্যের জয়গান

শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজের সভাপতি মলয় পীট জানান, “এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষকে একত্রিত করে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ বার্তা দিতে চাই। বসন্ত উৎসবকে ঘিরে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়, তার থেকে মানুষকে মুক্ত করে প্রকৃত আনন্দ ভাগ করে নিতে চাইছি।”

শান্তিনিকেতনের কাছে ‘বাহা উৎসব’ ও ‘বসন্ত বরণ’—প্রকৃতির কোলে অন্যরকম বর্ষবরণ

উৎসবের সারমর্ম: প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও মানুষের মিলন

‘বসন্ত বরণ’ আর ‘বাহা উৎসব’ আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের গভীর সম্পর্ক ও পারস্পরিক নির্ভরতা। শান্তিনিকেতনের কাছে এই অন্যরকম বর্ষবরণ উদযাপন একটি মানবিক, সামাজিক ও পরিবেশগত বার্তা বহন করে যা ভবিষ্যতের পথপ্রদর্শক।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!