সংকষ্টি চতুর্থী কবে এবং কেন পালন করা হয়?
হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, পূর্ণিমা বা অমাবস্যার পর চতুর্থ দিনে সংকষ্টি চতুর্থী পালিত হয়। কৃষ্ণপক্ষের এই দিনটি ভগবান গণেশের উদ্দেশ্যে উপবাস ও পূজার জন্য উপযুক্ত। বিশেষ করে, যদি এই দিনটি মঙ্গলবারে পড়ে, তখন তাকে ‘অঙ্গারকী চতুর্থী’ বলা হয়, যা আরও পুণ্যদায়ক বলে বিবেচিত হয়।
🙏 সংকষ্টি চতুর্থীর মাহাত্ম্য
ভগবান গণেশ হলেন জ্ঞানের, সৌভাগ্যের এবং সমস্ত বাধা অপসারণের দেবতা। এই দিনে উপবাস পালন করলে—
- জীবনের সমস্ত সংকট কেটে যায়
- পরিবারের মঙ্গল ও সন্তানের কল্যাণ হয়
- মনঃসংযোগ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
- ভাগ্য ও কর্মফল উন্নত হয়
বিশ্বাস করা হয়, এই দিন ভগবান শিব স্বয়ং গণেশকে সর্বশ্রেষ্ঠ দেবতা রূপে ঘোষণা করেছিলেন। সেই থেকেই এই দিনটি অত্যন্ত পবিত্র ও ফলপ্রদ মনে করা হয়।
🕉️ সংকষ্টি চতুর্থীর পূজার নিয়মাবলী
🔸 সকালবেলা স্নান করে শুদ্ধ পোশাক পরিধান করুন
🔸 একটি পরিষ্কার আসনে গণেশ ঠাকুরের মূর্তি স্থাপন করুন
🔸 দূর্বা ঘাস, লাল ফুল, মোদক, এবং লাড্ডু নিবেদন করুন
🔸 সন্ধ্যায় চাঁদের দর্শনের পর পূজা করুন
🔸 গণেশ মন্ত্র ও সংকষ্টি ব্রতকথা পাঠ করুন
🔊 জনপ্রিয় মন্ত্র:
“বক্রতুণ্ড মহাকায় সূর্যকোটিসমপ্রভা।
নির্বিঘ্নং কুরু মে দেব সর্বকার্যেষু সর্বদা॥”

🌙 উপবাসের নিয়ম ও কী কী খাওয়া যাবে?
উপবাস শুরু হয় সূর্যোদয়ের পর এবং শেষ হয় সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার পর গণেশ পূজার মাধ্যমে। দিনের বেলায় এই খাদ্যসমূহ গ্রহণ করা যেতে পারে:
✔️ সাবুদানার খিচুড়ি
✔️ ফলমূল
✔️ নুনহীন চিপস
✔️ ভাজা চিনা
✔️ সিদ্ধ আলু
🔁 সংকষ্টি ও বিনায়ক চতুর্থীর মধ্যে পার্থক্য
সংকষ্টি চতুর্থী | বিনায়ক চতুর্থী |
---|---|
কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী | শুক্লপক্ষের চতুর্থী |
সংকট থেকে মুক্তির জন্য উপবাস | গণেশ বন্দনার জন্য উপবাস |
‘সংকটহারা চতুর্থী’ নামেও পরিচিত | ‘বরদা বিনায়ক চতুর্থী’ নামেও পরিচিত |
সংক্ষেপে: সংকষ্টি চতুর্থী মানেই ‘সাফল্যের সরল পথ’
সংকষ্টি চতুর্থী কেবল একটি ধর্মীয় ব্রত নয়, এটি আধ্যাত্মিক উন্নতিরও এক পথ। প্রতি মাসে একবার এই উপবাস পালন করলে মনের শান্তি ও জীবনের ভারসাম্য বজায় থাকে। সকল সংকট থেকে মুক্তির এই পথ হোক আপনার জীবনের মোড় ঘোরানোর নতুন উপলক্ষ।