সম্প্রতি শিয়ালদহ আদালত আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি প্রদান করেছে। এছাড়া, আদালত রাষ্ট্রকে নির্যাতিতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আদালতের রায়:
বিচারক অনির্বাণ দাস সঞ্জয় রায়কে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণজনিত আঘাতের কারণে মৃত্যু) এবং ১০৩(১) (হত্যা) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাবাসের আদেশ দেন। এছাড়া, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং নির্যাতিতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানার অর্থ প্রদান না করলে সঞ্জয়কে আরও পাঁচ মাসের অতিরিক্ত কারাবাস ভোগ করতে হবে।
নির্যাতিতার পরিবারের প্রতিক্রিয়া:
নির্যাতিতার বাবা আদালতের ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি জানান, অর্থের মাধ্যমে তার মেয়ে ফিরে আসবে না। বিচারক এই বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, “টাকা দিয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে না, এটা আপনার শোকের পরিমাণ নির্ধারণ করতে সহায়ক হতে পারে।”
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায়ের বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, “আমরা ফাঁসির দাবি করেছিলাম। কী করে জানি না… আমাদের হাতে কেসটা থাকলে অনেক আগেই ফাঁসির অর্ডার করে নিতাম।” তিনি আরও বলেন, “দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, আমি তাই চাই।”
সামাজিক প্রতিক্রিয়া:
এই রায়টি সমাজে নৃশংস অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা প্রদান করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এমন ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে সমাজের নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হয়।
গত ১১ নভেম্বর শিয়ালদহ আদালতে ধর্ষণ ও হত্যা সংক্রান্ত মামলার বিচার শুরু হয়। পরদিন, ১২ নভেম্বর, আরজি কর কেসের ইন ক্যামেরা ট্রায়াল শুরু হয়। গত শনিবার (১৮ জানুয়ারি), শিয়ালদহ অতিরিক্ত দায়রা আদালত সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণজনিত আঘাতের কারণে মৃত্যু) ও ১০৩(১) (হত্যা) ধারায় তাকে দোষী ঘোষণা করা হয়। সোমবার, গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল সঞ্জয়ের শাস্তির দিকে।
এই রায়টি সমাজের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়, যা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরও মজবুত করে।