সম্প্রতি সইফ আলি খানকে নিয়ে ঘটে যাওয়া হামলার ঘটনায় একের পর এক রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখে রক্তাক্ত অবস্থায় লীলাবতী হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পুলিশের দাবি, সইফের ওপর দুষ্কৃতী হামলা হয় তাঁর অভিজাত বাসভবনে। তবে, ঘটনাটি নিয়ে নানা অস্বাভাবিকতা এবং সন্দেহ উত্থিত হয়েছে, যা পুরো ঘটনার সত্যতা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
সইফ আলি খানের ওপর হামলা: রহস্যময় ঘটনা
১৬ জানুয়ারি গভীর রাতে, সইফ আলি খানকে তার অভিজাত আবাসনে ছ’টি ছুরিকাঘাত করা হয় বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে, হামলার সময় এবং ঘটনাস্থলে ঘটে যাওয়া কিছু অস্বাভাবিকতা এবং পরবর্তী সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার সঙ্গতি নিয়েও তৈরি হয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন। সইফ আলি খানের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁকে হাসপাতালে আনার সময় ছুরির ২.৫ ইঞ্চি অংশ মেরুদণ্ডে আটকে ছিল। তাহলে কীভাবে তিনি এতটা সময় ঘরে বসে ছিলেন?
অস্বাভাবিক সময়কাল: কেন এত সময় নিয়েছিলেন সইফ?
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, সইফ ভোর ৪:১১ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছান, কিন্তু ১০ মিনিট আগে, অর্থাৎ ভোর ২:৩০ নাগাদ তিনি হামলার শিকার হন। তাহলে সইফ কীভাবে দেড় ঘণ্টা বাড়িতে বসে ছিলেন? তাঁর শরীরে ছুরির আঘাতের পর, এত সময় ধরে অপেক্ষা করার কী কারণ হতে পারে? এই প্রশ্নের কোনো উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি।
করিনা এবং সইফের বয়ানে বিরোধ: কেন এত প্রশ্ন?

ঘটনার পরে সইফের স্ত্রী করিনা কাপূর খানের বয়ান এবং সইফের অভিজ্ঞতায় বিরোধ রয়েছে। করিনার দাবি, তিনি রাতে তারকা বন্ধুদের সঙ্গে পার্টিতে ছিলেন, কিন্তু পরে আচমকা চিৎকার শুনে সইফের সাহায্যে জেহকে রক্ষা করতে যান। তবে, তারপর কেন করিনা হাসপাতালে যাননি এবং কেন সইফকে একা পাঠানো হয়েছিল, সেই বিষয়ে কোনো পরিষ্কার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। বরং, করিনা জেহ-কে নিরাপদ মনে করে দিদির কাছে চলে যান। তাহলে কি ঘটনাটি ছিল কিছুটা আলাদা?
ফরেন্সিক রিপোর্ট এবং চিকিৎসকদের দাবি: কোনটা সত্যি?
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে সইফের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। কিন্তু ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা সম্ভবত ভোঁতা অস্ত্রের আঘাত। এছাড়া, পরিচারিকা জানিয়েছেন যে আততায়ীর হাতে ছিল একটি লাঠি, তাহলে কি সইফের শরীরে ছুরির বদলে লাঠির আঘাত ছিল?
পুলিশের ভূমিকা এবং তদন্তের অস্বচ্ছতা
পুলিশের তদন্তে একাধিক ভুল পদক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। সঠিক অপরাধীকে ধরতে পুলিশের একের পর এক ভুল পদক্ষেপ ঘটেছে এবং ঘটনার তদন্তে যথাযথ জবাবদিহি নেই। সইফের পরিবার, পুলিশ, এবং হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের নীরবতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
প্রশ্নের মুখে সইফ আলি খান হামলা: কিছু রহস্য রয়ে যাচ্ছে
এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন এবং সন্দেহ উঠে আসছে, যা সইফ আলি খানের পরিবার এবং তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে স্পষ্ট উত্তর দাবি করছে। কেন এত সময় পরেও ঘটনাটি নিয়ে ধোঁয়াশা? কেন সইফ এবং করিনার বয়ান একে অপরের সাথে মেলে না? কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ তদন্তে পরস্পরবিরোধী তথ্য দিয়েছে? এই সব প্রশ্নের উত্তর না মেলায় সইফ আলি খানের ওপর হামলার ঘটনা আরও রহস্যময় হয়ে উঠছে।
শেষ কথা:
প্রশ্নগুলির মধ্যে গা ছমছমে এক অমীমাংসিত রহস্য রয়েছে। সইফ আলি খান এবং তাঁর পরিবার কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যে উত্তর মিলছে না, তা কেবল রহস্যের অন্ধকারেই গভীর করছে। কীভাবে সইফ আলি খানকে রক্ষা করা গিয়েছিল, এবং কেন এত সময় পরেও কোনো পরিষ্কার ছবি তৈরি হচ্ছে না, সে বিষয়ে অচিরেই কিছু স্পষ্ট তথ্য আশা করা হচ্ছে। তবে, সইফ আলি খান এবং তার পরিবার থেকে একে একে প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য সময়ের অপেক্ষা।
এই রহস্যের জবাব কে দেবে?