কিউআর কোড, বর্গাকার সাদাকালো সাঙ্কেতিক ছবি, আজ অনলাইন লেনদেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। কিন্তু এরই মধ্যে লুকিয়ে আছে প্রতারণার একাধিক ফাঁদ। একটু অসতর্ক থাকলেই আপনার কষ্টার্জিত অর্থ চলে যেতে পারে প্রতারকদের হাতে। আসুন, জেনে নিই কিউআর কোড প্রতারণার গল্প এবং কীভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
ঘটনা ১: খাবারের কুপন নয়, চুরি যাওয়া ৫০০ টাকা
কসবার রাজডাঙার এক গৃহবধূর দরজায় এলেন জনপ্রিয় খাবার সরবরাহকারী সংস্থার পোশাক পরা এক ব্যক্তি। তিনি একটি কুপন দিলেন, যাতে একটি কিউআর কোড ছিল। জানালেন, সেটি স্ক্যান করলে পরবর্তী অর্ডারে ৫০ শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। গৃহবধূ সেই কুপনটি স্ক্যান করার পর দেখলেন, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে!
ঘটনা ২: টাকা ফেরতের নামে ২৪ হাজার টাকা লোপাট
হুগলির এক যুবক সন্ধ্যায় ফোনে পেলেন আট হাজার টাকা জমা পড়ার বার্তা। কিছুক্ষণ পর এক অপরিচিত ব্যক্তি ফোন করে জানালেন, ভুল করে তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গেছে। যুবককে কিউআর কোড পাঠিয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু সেই কোড স্ক্যান করার পর যুবকের অ্যাকাউন্ট থেকে তিন দফায় ২৪ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়!
কিউআর কোড প্রতারণার পদ্ধতি
প্রতারণার জন্য দুষ্কৃতীরা কিউআর কোডের সাহায্যে নিরীহ মানুষকে ফাঁদে ফেলে।
- ভুল তথ্য দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করা।
- ছাড় বা ক্যাশব্যাকের লোভ দেখানো।
- ভুল করে টাকা পাঠানোর নাটক সাজানো।
- ফিশিং বা স্পাইওয়্যার যুক্ত কোড ব্যবহার করা।
কীভাবে সুরক্ষিত থাকবেন?
- অচেনা কিউআর কোড স্ক্যান করবেন না।
- ব্যাঙ্ক বা খাবার সরবরাহ সংস্থার কোড যাচাই করুন।
- ভুল করে টাকা পেলে তা থানার মাধ্যমে ফেরত দিন।
- অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
- আপডেট থাকা অ্যাপ ব্যবহার করুন।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
কলকাতা পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞ কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিউআর কোডের ব্যবহার অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। অচেনা কারও কোড স্ক্যান করা বিপজ্জনক। ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত সমস্যায় আইনগত সাহায্য নিন।’’
সাইবার অপরাধের জাল এড়াতে নিজেকে আরও ‘স্মার্ট’ করে তুলুন। সচেতনতা এবং সতর্কতা কেবল আপনার অর্থ সুরক্ষিত করবে না, বরং প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার শিখতেও সাহায্য করবে।