Ad_vid_720X90 (1)
Advertisment
সন্তুর অকাল মৃত্যু: পোষ্য কুকুরে টিক ফিভার এবং প্রতিরোধের উপায়

সন্তুর অকাল মৃত্যু: পোষ্য কুকুরে টিক ফিভার এবং প্রতিরোধের উপায়

ভারত-বাংলাদেশের জনপ্রিয় সারমেয় সন্তুর অকাল মৃত্যু দেশের দুই দিকের লক্ষ লক্ষ ফলোয়ারদের মন খারাপ করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিল সন্তু, এবং তার মৃত্যুর কারণ সম্ভবত টিক ফিভার। তার এই মৃত্যু আমাদের সকলকে সতর্ক করে দিয়েছে, বিশেষত পোষ্য কুকুরদের জন্য।

আপনার পোষ্যও যদি টিক ফিভারে আক্রান্ত হয়, তবে কি করবেন? কীভাবে এই রোগের লক্ষণ চিহ্নিত করবেন এবং কীভাবে আপনার পোষ্যকে সুরক্ষিত রাখবেন, তা জানুন।

টিক ফিভার কী?

টিক ফিভার একটি মারাত্মক ভাইরাসবাহিত রোগ, যা পোষ্য কুকুর এবং অন্যান্য গৃহপালিত পশুর শরীরে ছড়ায়। এই রোগ মূলত টিক (পোকা) দ্বারা সংক্রমিত হয়, যা পশুর শরীরে বসে রক্ত খায় এবং তার মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ায়। বিভিন্ন টিক-বাহিত রোগগুলির মধ্যে রয়েছে এহরলিচিওসিস, অ্যানাপ্লাজমোসিস, লাইম ডিজিজ, বেবেসিওসিস, এবং আরও অনেক ভয়ঙ্কর রোগ।

সন্তুর অকাল মৃত্যু: পোষ্য কুকুরে টিক ফিভার এবং প্রতিরোধের উপায়

টিকের মাধ্যমে কীভাবে ছড়ায় রোগ?

টিকগুলি পশুর কানে বা কানের চারপাশে বসে রক্ত খেয়ে নিজেদের বংশবিস্তার করে। যখন টিক অন্য কোনও ভাইরাসে আক্রান্ত পশুর রক্ত খেয়ে নতুন পোষ্য কুকুরের শরীরে বসে, তখন সেই টিকের মাধ্যমে রোগ সংক্রমিত হয়।

টিক ফিভারের লক্ষণ কী কী?

টিক ফিভারের সাধারণ লক্ষণগুলি নিম্নরূপ:

  • হঠাৎ জ্বর
  • শরীরের দুর্বলতা
  • সর্দি, কাশি
  • খাওয়ার প্রতি অনীহা
  • অস্বাভাবিক আচরণ

যদি আপনার পোষ্যের মধ্যে এই ধরনের লক্ষণ দেখা যায়, তবে দেরি না করে দ্রুত পশু চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

পোষ্যকে কীভাবে টিক ফিভার থেকে রক্ষা করবেন?

  1. টিক-মুক্ত রাখুন: পোষ্যকে টিক থেকে মুক্ত রাখতে পশু চিকিৎসালয়ে বিভিন্ন শ্যাম্পু এবং টিক প্রতিরোধী ওষুধ পাওয়া যায়। এই শ্যাম্পু এবং ওষুধগুলি প্রয়োগ করে আপনার পোষ্যকে টিক-মুক্ত রাখুন।
  2. টিক কলার ব্যবহার করুন: টিক কলার আপনার পোষ্যের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এই কলারটি পোষ্য কুকুরের গলায় পরিয়ে দিলে টিক পোষ্যকে আক্রমণ করতে পারে না।
  3. পাউডার বা স্প্রে ব্যবহার করুন: পোষ্যকে বাইরে নিয়ে গেলে পাউডার বা স্প্রে ব্যবহার করে তাদের টিক থেকে রক্ষা করুন। এটি পোষ্যের শরীরকে পরজীবী সংক্রমণের থেকে সুরক্ষা দেয়।
  4. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: পোষ্যকে নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে টিক সংক্রমণের লক্ষণ চিহ্নিত করুন।
  5. পরিষ্কার পরিবেশে রাখুন: আপনার পোষ্যকে পরিষ্কার এবং সুরক্ষিত পরিবেশে রাখুন। ঘরের মধ্যে টিকের বাসা বাঁধা প্রতিরোধ করতে নিয়মিত ঘর পরিষ্কার রাখুন।
সন্তুর অকাল মৃত্যু: পোষ্য কুকুরে টিক ফিভার এবং প্রতিরোধের উপায়
টিক কলার

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:

  • টিক কলার: বাজারে পাওয়া যায় বিভিন্ন ধরনের টিক কলার, যা পোষ্য কুকুরের গলায় পরিয়ে দিলে টিকের সংক্রমণ কমে যায়।
  • পাউডার ও স্প্রে: পোষ্যদের জন্য বিশেষ পাউডার বা স্প্রে রয়েছে, যা ব্যবহারে টিক থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
  • অ্যন্টি-প্যারাসাইট চিকিৎসা: টিক এবং অন্যান্য পরজীবী দূর করার জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর পশু চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যন্টি-প্যারাসাইট চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

কীভাবে ছড়াচ্ছে এই রোগ?

রাস্তার কুকুরদের গায়েও টিক থাকে, যা আপনার বাড়ির পোষ্যদের শরীরে আসতে পারে। রাস্তায় নিয়ে গেলে অথবা পোষ্যকে পশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকেও টিক সংক্রমিত হতে পারে। তাই পোষ্যকে নিরাপদ রাখতে আপনার উচিত, রাস্তার কুকুরদের কাছ থেকে দূরে রাখা এবং অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা না করতে দেওয়া।

সন্তুর অকাল মৃত্যু: পোষ্য কুকুরে টিক ফিভার এবং প্রতিরোধের উপায়

শেষকথা

টিক ফিভার একটি ভয়ঙ্কর রোগ, যা পোষ্য কুকুরের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। সন্তুর মৃত্যু আমাদের সকলকে সতর্ক করেছে। তাই পোষ্যকে সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত চিকিৎসক পরামর্শ, টিক-মুক্ত রাখার ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি।

আপনার পোষ্যকে টিক ফিভারসহ অন্যান্য রোগ থেকে রক্ষা করতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে ভুলবেন না। আজ থেকেই সচেতন হোন, এবং আপনার প্রিয় কুকুরকে সুস্থ রাখুন।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!