পরিবর্তনী একাদশী ২০২৫: তারিখ ও শুভ মুহূর্ত (কলকাতা, ভারত অনুযায়ী)
- একাদশী তারিখ: ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বৃহস্পতিবার)
- পার্শ্বকাল সময়: দুপুর ১২:৫০:৪০ থেকে ১৫:২০:৫৮ পর্যন্ত
- স্থিতিকাল: ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট
- হরি বসর সমাপ্তি: সকাল ১০:২০:২৯ (৪ সেপ্টেম্বর)
পরিবর্তনী একাদশী পূজার তাৎপর্য
পরিবর্তনী একাদশীকে পার্শ্ব একাদশী বা পদ্মা একাদশী নামেও ডাকা হয়। বিশ্বাস করা হয়, এই দিনে ভগবান বিষ্ণু কীর্তন শয্যায় শায়িত অবস্থায় পাশ পরিবর্তন করেন। তাই এর নাম “পরিবর্তনী একাদশী”। এই ব্রতে ভগবান বিষ্ণুর বামন অবতার-এর পূজা করা হয়। শাস্ত্র মতে, এদিনের ব্রত পালন করলে বজপেয় যজ্ঞের সমান ফল লাভ হয় এবং জীবনের সমস্ত পাপ ধ্বংস হয়ে যায়।
পরিবর্তনী একাদশী ব্রত ও পূজারীতি
- ব্রতীরা দশমী তিথিতে সূর্যাস্তের পর খাদ্য গ্রহণ করবেন না এবং রাতভর ভগবান বিষ্ণুর নামস্মরণ করবেন।
- একাদশীর সকালে স্নান সেরে, উপবাসের সংকল্প নেবেন এবং ভগবান বিষ্ণুর প্রতিমার সামনে ঘৃত প্রদীপ প্রজ্বলন করবেন।
- পূজায় তুলসী পাতা, তিল, মৌসুমি ফল ও নৈবেদ্য নিবেদন করা শুভ।
- সারা দিন অন্নগ্রহণ থেকে বিরত থেকে সন্ধ্যায় পূজা শেষে ফল গ্রহণ করা যায়।
- এদিন দান-পুণ্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। তাম্রপাত্র, চাল ও দই দান করলে মহাফল লাভ হয়।
- দ্বাদশীতে উপবাস ভঙ্গ করবেন সূর্যোদয়ের পর এবং ব্রাহ্মণ ও অভাবীদের অন্নদান করবেন।
পরিবর্তনী একাদশীর কাহিনি
মহাভারতের সময় অর্জুনকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই একাদশীর মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছিলেন।
ত্রেতাযুগে মহাদানশীল অসুররাজ বলী তাঁর দান ও যজ্ঞ দ্বারা দেবরাজ ইন্দ্রকে সিংহাসনচ্যুত করে স্বর্গে অধিকার নেন। দেবতারা আতঙ্কিত হয়ে ভগবান বিষ্ণুর কাছে প্রার্থনা করেন। তখন তিনি বামন অবতার গ্রহণ করে রাজা বলীর কাছে তিন পা জমি দান চান।
রাজা বলী সম্মত হতেই বিষ্ণু বিশাল আকার ধারণ করেন। এক পা দিয়ে তিনি পৃথিবী আচ্ছাদন করলেন, দ্বিতীয় পা দিয়ে স্বর্গলোক। তৃতীয় পা রাখার মতো আর কোনো স্থান না থাকায় বলী নিজের মাথা এগিয়ে দিলেন। ভগবান তাঁর মাথায় পদার্পণ করে তাঁকে পাতাল লোকের রাজা করলেন এবং আশীর্বাদ করলেন, “আমি সর্বদা তোমার সঙ্গেই থাকব।”
সেই থেকেই বিশ্বাস করা হয়, পরিবর্তনী একাদশীতে ভগবান বিষ্ণুর এক রূপ পাতাল লোকের রাজা বলীর সঙ্গে থাকেন এবং অন্য রূপে তিনি শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মধারী শয্যাশায়ী অবস্থায় কীর্তন সাগরে বিশ্রাম নেন।
শেষকথা
পরিবর্তনী একাদশীর দিনে ভগবান বিষ্ণুর বামন অবতারের পূজা করলে জীবনে পুণ্য, সমৃদ্ধি ও ভগবৎ কৃপা লাভ হয়। একই সঙ্গে এই ব্রত পালন করলে পূর্বজন্মের পাপও নষ্ট হয়। ভক্তিভরে ব্রত পালনে ভগবান বিষ্ণুর অনন্ত আশীর্বাদ মেলে।