Gen-Z-র প্রতিবাদে অশান্ত নেপাল, কাঠমাণ্ডুগামী ফ্লাইট বাতিল করল ইন্ডিগো-স্পাইসজেট
কাঠমাণ্ডু/নয়াদিল্লি : প্রতিবাদের আগুনে উত্তাল নেপাল। রাজধানী কাঠমাণ্ডুতে টানা দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। Gen-Z-দের নেতৃত্বে সরকারের বিরুদ্ধে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র ক্ষোভ। বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত অন্তত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এরই মধ্যে ইস্তফা দিয়ে সেনার হেলিকপ্টারে রাজধানী ছেড়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

অশান্ত পরিস্থিতির জেরে কাঠমাণ্ডুগামী সমস্ত উড়ান আপাতত স্থগিত করেছে একাধিক এয়ারলাইন। ইন্ডিগো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে—
“কাঠমাণ্ডুর বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিমানবন্দর বন্ধ। কাঠমাণ্ডুতে আসা এবং যাওয়ার সমস্ত ফ্লাইট স্থগিত রাখা হয়েছে। যাত্রীদের বিকল্প ফ্লাইট বা টাকার ফেরতের সুযোগ দেওয়া হবে। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।”
IndiGo tweets, "In view of the prevailing situation in Kathmandu, the airport has been closed for operations. Consequently, all flights to and from Kathmandu stand suspended as of now. If your travel is impacted, you may conveniently opt for an alternate flight or claim a refund… pic.twitter.com/65sUimUPzE
— ANI (@ANI) September 9, 2025
অন্যদিকে স্পাইসজেট জানিয়েছে—
“১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে কাঠমাণ্ডু থেকে আসা/যাওয়া করা সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। যাত্রীদের অফিসিয়াল চ্যানেলে নজর রাখার অনুরোধ করা হচ্ছে।”
SpiceJet tweets, "Travel Advisory: Due to the prevailing situation in Kathmandu, our flights To/From Kathmandu stand cancelled for 10th September 2025." pic.twitter.com/aAYUcBAGzI
— ANI (@ANI) September 9, 2025
কেন এই বিক্ষোভ?
প্রধানমন্ত্রী ওলির সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জমে উঠছিল তরুণ সমাজের মধ্যে।
- বেকারত্ব, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল।
- শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সংস্কারের দাবি তোলা হচ্ছিল।
- সবচেয়ে বড় দাবি— দেশের নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্মের সরাসরি অংশগ্রহণ।
Gen-Z আন্দোলনকারীরা স্লোগান তুলেছেন—
“নতুন নেপাল, নতুন নেতৃত্ব চাই।”
প্রতিবাদকারীদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জনগণকেই সরাসরি সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে, এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বে Gen-Z প্রজন্মের মুখ তুলে আনতে হবে।
নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতার ইতিহাস
নেপালের ইতিহাসে রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন কিছু নয়।
- ২০০৮ সালে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে নেপালকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করা হয়।
- তারপর থেকে সরকার পরিবর্তন হয়েছে একাধিকবার।
- রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিভাজন, অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার লড়াই ও দুর্নীতির অভিযোগে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বারবার রাস্তায় নেমে এসেছে।
তবে এবারের আন্দোলন আলাদা— কারণ এর নেতৃত্ব দিচ্ছে নতুন প্রজন্ম, যারা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দ্রুত সংগঠিত হচ্ছে।

ভারতের জন্য কী বার্তা?
নেপাল ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। সীমান্ত বাণিজ্য, পর্যটন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, কর্মসংস্থান— সবকিছুতেই ভারতের সঙ্গে নেপালের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
- কাঠমাণ্ডুর অশান্তি সরাসরি প্রভাব ফেলছে পর্যটনে ও বাণিজ্যে।
- ভারতীয় পর্যটক ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
- রাজনৈতিক পরিবর্তন হলে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানও প্রভাবিত হতে পারে।
ভবিষ্যৎ কী হতে পারে?
বিশেষজ্ঞদের মতে—
- যদি সরকার দ্রুত নতুন সংলাপ শুরু না করে, তবে আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে।
- তরুণ প্রজন্মের দাবি মানা না হলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হবে।
- নেপালের স্থিতিশীলতা নষ্ট হলে তা সরাসরি ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তেও প্রভাব ফেলতে পারে।

শেষকথা
নেপালে Gen-Z প্রজন্মের আন্দোলন শুধুই একটি রাজনৈতিক প্রতিবাদ নয়, বরং প্রজন্মান্তরের পরিবর্তনের ডাক। অশান্ত পরিস্থিতিতে ভারতীয়দের জন্য আপাতত সবচেয়ে বড় বার্তা— সতর্ক থাকা এবং ভ্রমণ এড়ানো। নেপালের ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই নির্ভর করছে তরুণদের হাতে।