নেতাজি ইন্ডোরে আবেগে গর্জে উঠল ‘জয় মোহনবাগান’— টুটু বোসকে মোহনবাগান রত্নে সম্মান, সৌরভ-ব্যারেটোর চোখে জল
ইতিহাস, আবেগ আর গর্ব—এই তিনেই মোড়া মোহনবাগান দিবস। খালি পায়ে ব্রিটিশদের হারানোর যে স্পর্ধা ১৯১১ সালে শুরু হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় আজও পালিত হয় এই দিন। ২৯ জুলাই, ২০২৫-এ সেই চিরগর্বের দিনটিতে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম ভরে উঠল সবুজ-মেরুনের উচ্ছ্বাসে।

সকাল থেকেই ছিল উৎসবের আমেজ। পতাকা উত্তোলন, অমর একাদশকে স্মরণ করে কেক কাটা, প্রাক্তন ফুটবলারদের প্রদর্শনী ম্যাচ—সব মিলিয়ে ছিল চিরচেনা উচ্ছ্বাস। ক্লাব সভাপতি দেবাশিস দত্ত বলেন, “বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো যেমন, মোহনবাগান দিবসও ঠিক তেমনই।”

টুটু বোসকে ‘মোহনবাগান রত্ন’, আবেগে চোখ ভিজল সৌরভ-ব্যারেটোর
সন্ধ্যার বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন স্বপনসাধন ‘টুটু’ বোস। দীর্ঘদিনের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ‘মোহনবাগান রত্ন’ সম্মান দেওয়া হয়। ক্লাবের সচিব সৃঞ্জয় বোস ও সভাপতি দেবাশিস দত্তের হাত থেকে সম্মান গ্রহণ করে আবেগে ভেসে যান টুটুবাবু। বলেন, “মনে হচ্ছে যেন হাতে চাঁদ পেলাম।”

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, “ঠিক মানুষকে ঠিক সম্মান দেওয়া হয়েছে।” হোসে ব্যারেটো বলেন, “টুটুবাবু আগে একজন মোহনবাগান সমর্থক, তারপর কর্তা। তাঁর মতো আবেগ আর কেউ দেখায়নি ক্লাবের জন্য।”
উপস্থিত ছিলেন তারকা-রাজনীতিক-প্রাক্তন খেলোয়াড়েরা
অনুষ্ঠানে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন খেলোয়াড় আইএম বিজয়ন, বাইচুং ভুটিয়া প্রমুখ। মঞ্চ আলোকিত করে ছিলেন মোহনবাগানের অমর একাদশের উত্তরসূরিরাও। এমনকি ইস্টবেঙ্গল ও মহামেডানের কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন সৌহার্দ্যের বার্তা নিয়ে।

পুরস্কারে সম্মানিত ক্লাবের গর্বিত ক্রীড়াবিদেরা
- সেরা ফুটবলার: আপুইয়া
- সেরা উদীয়মান ফুটবলার: দীপেন্দু বিশ্বাস
- সেরা ক্রিকেটার (অরুণ লাল স্মৃতি): রণজ্যোৎ সিং খাইরা
- জীবনকৃতি সম্মান: রাজু মুখোপাধ্যায়
- সেরা অ্যাথলিট (প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতি): অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
- সেরা ক্রীড়া সাংবাদিক (মরণোত্তর, মতি নন্দী স্মৃতি): অরুণ সেনগুপ্ত ও মানস চক্রবর্তী

সংগীত-উৎসবে শেষ মুহূর্তে উত্তাল মোহনবাগানপ্রেম
দিনভর ক্রীড়া ও পুরস্কারের আবহ শেষে, সৌমেন্দ্র ও সুরজিতের সুরে উদ্বেল হয়ে ওঠে নেতাজি ইন্ডোর। হাজারো গলায় প্রতিধ্বনিত হয়—“জয় মোহনবাগান!” গর্ব, ভালোবাসা আর ইতিহাসের সংমিশ্রণে আরও একবার স্মরণীয় হয়ে থাকল মোহনবাগান দিবস ২০২৫।