দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে বাকি !!

Days
Hours
Minutes
Seconds

অটোচালকের ছেলে থেকে টেস্ট নায়ক — ইংল্যান্ড জয়ে ইতিহাস গড়লেন মহম্মদ সিরাজ

অটোচালকের ছেলে থেকে টেস্ট নায়ক — ইংল্যান্ড জয়ে ইতিহাস গড়লেন মহম্মদ সিরাজ

ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন মুখ মহম্মদ সিরাজ এখন কেবল বোলিংয়ের জন্য নয়, তাঁর জীবনের লড়াইয়ের জন্যও সবার হৃদয় জয় করে নিয়েছেন। IND vs ENG ২০২৫ টেস্ট সিরিজে চমকপ্রদ পারফর্ম করে ইংল্যান্ডে ভারতের পতাকা গর্বের সঙ্গে ওভালে ওড়ালেন হায়দরাবাদের এই পেসার। অথচ একসময় তাঁর জীবন ছিল কষ্টে ভরা।

ইংল্যান্ড সফরে রেকর্ড গড়লেন সিরাজ

সাম্প্রতিক IND vs ENG সিরিজে সিরাজ দুই ইনিংসে ৪ ও ৫ উইকেট নিয়ে নিজের জাত চেনান। শুধু তাই নয়, তিনিই প্রথম এশিয়ান বোলার যিনি ইংল্যান্ডে সাতবার ইনিংসে চার বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন। গোটা সিরিজে তিনি ২৩টি উইকেট সংগ্রহ করেন, যা একটি ইংল্যান্ড সফরে ভারতীয় পেসারদের মধ্যে যুগ্ম সর্বাধিক।

অভাব থেকে আলোয় আসা

১৯৯৪ সালে হায়দরাবাদের বানজারা হিলসের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম সিরাজের। বাবা ছিলেন অটো রিকশাচালক, মা কাজ করতেন অন্যের বাড়িতে। কিন্তু তাতে ক্রিকেটের প্রতি তাঁর ভালোবাসা একটুও কমেনি। কখনও কিটস কেনার সামর্থ্য ছিল না, তবুও চার্মিনার ক্রিকেট ক্লাবে অনুশীলন চালিয়ে যান।

ক্রিকেটে ওঠার লড়াই

২০১৫ সালে হায়দরাবাদের অনূর্ধ্ব-২৩ দলে সুযোগ পান সিরাজ। পরের বছর ২০১৬-১৭ রঞ্জি ট্রফি ছিল তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো সময় — সেখানে তিনি ৪১টি উইকেট নিয়ে নজর কাড়েন। এরপর ২০১৭ সালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তাঁকে আইপিএলে নেয় ₹২.৬০ কোটি টাকায়।

বাবার মৃত্যু আর ব্রিসবেনের জয়ের উৎসর্গ

২০২০-২১ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় বাবাকে হারান সিরাজ। কিন্তু দমে যাননি। ব্রিসবেন টেস্টে একাই ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের ঐতিহাসিক জয়ে বড় ভূমিকা নেন। বাবাকেই উৎসর্গ করেন সেই পারফরম্যান্স। এখন তিনি মা ও ভাইকে নিয়ে সংসার চালান।

ওয়ার্কলোড নয়, টানা পাঁচ টেস্টে নেতৃত্ব

বর্তমান ইংল্যান্ড সফরে যেখানে অনেক বোলার বিশ্রামে ছিলেন, সেখানে সিরাজ প্রতিটি ম্যাচ খেলেছেন। ওভাল ও এজবাস্টনে বুমরা না থাকলেও নেতৃত্ব দিয়েছেন বোলিং বিভাগে। আকাশ দীপ ও প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় আক্রমণ সামলেছেন নিঃশব্দে।


মহম্মদ সিরাজের গল্প শুধুই ক্রিকেটের নয় — এটা এক স্বপ্নপূরণের কাহিনি। যে স্বপ্ন দেখেছিল এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া একটি ছেলে, যে শুধু পরিশ্রম আর নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে আজ ভারতের বোলিংয়ের ভরসা হয়ে উঠেছে। তাঁকে দেখেই আজ হাজারো তরুণ বুঝতে পারছেন — সীমাবদ্ধতা কিছু নয়, যদি লড়ার জেদ থাকে।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
আরও পড়ুন
error: Content is protected !!