মেরু অঞ্চলের নতুন সংকেত
বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর বরফ দ্রুত গলছে—এ আর নতুন খবর নয়। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, গত ২০ বছরে বরফ গলনের হার কিছুটা ধীর হয়েছে। ব্রিটেনের এক্সিটার বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.আর. ইংল্যান্ডের নেতৃত্বাধীন গবেষক দল জানিয়েছেন, এ স্বস্তি দীর্ঘস্থায়ী নয়।
কেন ধীর হচ্ছে বরফ গলনের হার?
গবেষণায় উঠে এসেছে দুটি বড় কারণ:
- পেসিফিক ডিকেডাল অসিলেশন (Pacific Decadal Oscillation): প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা ওঠানামার প্রভাব মেরু অঞ্চলের বরফে পড়ছে।
- আটলান্টিক মাল্টিডিকেডাল ভ্যারিয়েবিলিটি (Atlantic Multidecadal Variability): আটলান্টিক সাগরের প্রাকৃতিক পরিবর্তনের কারণে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গিয়ে বরফ গলন সাময়িকভাবে কমাচ্ছে।
কতটা বরফ গলেছে?
- ১৯৮০’র দশক থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার ঘন কিলোমিটার বরফ গলে গেছে।
- ১৯৯৩ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে প্রতি দশকে ১৩ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার বরফ গলেছিল।
- গত ২০ বছরে সেই হার নেমে এসেছে প্রতি দশকে ৩.৫ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার।
জলবায়ুর পরিবর্তন কি ধীর হচ্ছে?
বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট জানিয়েছেন—না। বরফ গলনের হার সাময়িকভাবে কমলেও জলবায়ুর পরিবর্তন ধীর হচ্ছে এমন প্রমাণ নেই। উষ্ণায়নের প্রবাহ চলছেই।
ভবিষ্যতের বিপদ কোথায়?
গবেষক ইংল্যান্ড এই পরিস্থিতিকে পাহাড় থেকে বল গড়ানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলছেন—
- আগামী ৫ বছর হয়তো কম গতিতে বরফ গলবে (৫০% সম্ভাবনা)।
- ১০ বছর পর্যন্ত এই ধারা থাকতে পারে মাত্র ২৫% সম্ভাবনায়।
- এরপর বরফ গলন আরও তীব্র আকারে ফিরে আসবে।
এর ফলে—
- সমুদ্রস্তর বৃদ্ধি পাবে।
- বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
- উপকূলবর্তী দেশগুলো ভয়ঙ্কর ঝুঁকির মুখে পড়বে।

শেষকথা
যদিও মেরু অঞ্চলের বরফ আপাতত ধীরে গলছে, এটি কোনও স্বস্তির খবর নয়। বরং বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এর পরে আসতে পারে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি। তাই এখনই গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার, এবং পরিবেশ রক্ষায় বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।