বোলপুর, বীরভূম:
ভিনরাজ্যে বাংলাভাষী মানুষের প্রতি বর্ণবৈষম্য, হেনস্থা এবং অসম্মানের বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাষা আন্দোলনের সূচনা ঘটল বোলপুর থেকে। রবিবার দুপুরে ট্যুরিস্ট লজ মোড় থেকে জামবনি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার পদযাত্রায় অংশ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতে ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি—এক প্রতীকী বার্তা বাঙালি সংস্কৃতি ও মর্যাদা রক্ষার।
সঙ্গে ছিলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এবং জেলার একাধিক বিধায়ক। পদযাত্রা ঘিরে শহরে নিরাপত্তা ছিল আঁটসাঁট, রাস্তার দু’পাশে ছিল ব্যারিকেড। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য ভিড় জমায় সাধারণ মানুষ। নেত্রীও প্রত্যেককে নমস্কার করে অভিবাদন জানান।
কেন এই প্রতিবাদ?
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ভিনরাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। কোথাও তাঁদের দিয়ে শৌচাগার পরিষ্কার করানো, কোথাও পর্যাপ্ত খাবার না দেওয়া, আবার কোথাও অশালীন মন্তব্য ও বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। এসব ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস মুখ খুলেছে রাজ্যজুড়ে।
একুশে জুলাইয়ের সভা থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন—”বাংলা ভাষা ও বাঙালির সম্মান রক্ষায় আমরা রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নামব।” সেই ঘোষণারই বাস্তব রূপ বোলপুরের এই পদযাত্রা।
ধারাবাহিক কর্মসূচি:
২ অগস্ট থেকে প্রতি সপ্তাহের শনিবার ও রবিবার ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলবে। জেলার পর জেলা, শহরের পর শহর ধরে এগোবে ‘ভাষা বাঁচাও আন্দোলন’। শুধু একদিনের মিছিল নয়, এই কর্মসূচি চলবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত।
রাজনৈতিক তাৎপর্য:
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, তৃণমূলের এই বাঙালি অস্মিতার লড়াই একধরনের সাংস্কৃতিক জাতিসত্তার রাজনৈতিক পুনরুজ্জীবন। বাংলা ভাষা, রবীন্দ্রনাথ, এবং বাঙালিয়ানার উপর আঘাত এলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে মাথা নত করেন না, আজকের পদযাত্রা সেই বার্তাই দিল রাজ্যবাসীকে।