কলকাতার মেছুয়া এলাকায় ঋতুরাজ হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৪ জনের মৃত্যুর পর শহরের ছাদনির্ভর রেস্তরাঁগুলি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কলকাতা পুরসভার তরফে শহরের সমস্ত ‘রুফটপ’ রেস্তরাঁ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। শুক্রবার ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, ছাদ কমন এলাকা হওয়ায় সেখানে ব্যক্তিগত ব্যবসা করা অবৈধ। আগুন লাগলে যেন বাসিন্দারা ছাদে গিয়ে আশ্রয় নিতে পারেন, সেই সুযোগ বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।
পুরসভার তরফে প্রকাশিত নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ছাদ কোনওভাবেই ব্যক্তিগত ব্যবহার বা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারযোগ্য নয়। রেস্তরাঁ নির্মাণের জন্য ছাদ বিক্রিও বেআইনি। মেয়র বলেন, “ছাদ বিক্রি যেমন বেআইনি, তেমন ছাদ দখল করে রেস্তরাঁ চালানোও অনৈতিক। ইমার্জেন্সি পরিস্থিতিতে ছাদই শেষ ভরসা হয়। সেই রাস্তা বন্ধ হলে প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়ে।”
ইতিমধ্যে শহরের বহুল পরিচিত ম্যাগমা হাউসের রুফটপ রেস্তরাঁকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন বোরো থেকে রিপোর্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে—কোথায়, কতগুলি রুফটপ রেস্তরাঁ আছে তার খতিয়ান তৈরি করা হচ্ছে।
মেয়র জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে একটি উচ্চস্তরীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। দমকল, পুলিশ ও পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই কমিটি রেস্তরাঁগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখবে।
ফলপট্টি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ভবন নিয়েও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মেয়রের দাবি, নাগরিকদের সচেতনতাও এই ধরনের বিপর্যয় এড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “গণতন্ত্রে শুধু সরকারের উপর দায় চাপিয়ে চলবে না, সাধারণ মানুষকেও দায়িত্ব নিতে হবে।”
কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন থেকে প্রতিটি নির্মীয়মাণ ভবনের বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের সময়ই সমস্ত তথ্য অ্যাসেসমেন্ট রেকর্ডে সংযুক্ত করা হবে।
সামগ্রিকভাবে, শহরের নাগরিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়েই কলকাতা পুরসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে স্পষ্ট করেছেন মেয়র।
আরও এই ধরনের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের নিউজ পোর্টালে।
আপনার মতামত জানান মন্তব্যে।