Ad_vid_720X90 (1)
Advertisment
কলকাতায় ভূগর্ভের জলস্তর কমার ফলে বাড়ছে বিপদ: বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

কলকাতায় ভূগর্ভের জলস্তর কমার ফলে বাড়ছে বিপদ: বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

কলকাতা শহরে ক্রমশ নামছে ভূগর্ভস্থ জলের স্তর। এই পরিস্থিতি ভবিষ্যতে বড়সড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাড়িঘর থেকে শুরু করে ব্রিজ ও ফ্লাইওভার, সবই এই সমস্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। পরিবেশকর্মী ও ইঞ্জিনিয়াররা এই সমস্যার সমাধানের উপর জোর দিচ্ছেন।

কলকাতার ভূগর্ভস্থ জলের সংকট: কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের মতে, “ভূগর্ভ থেকে অনবরত জল তোলার ফলে জলস্তর ক্রমশ কমে যাচ্ছে। এর ফলে মাটি আলগা হয়ে শহর বসে যেতে পারে। বাড়ি, রাস্তা, ব্রিজ সবকিছুতেই ফাটল ধরতে পারে।”

পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, দু’দশক আগে কলকাতার ভূগর্ভস্থ জলস্তর ছিল ৭-১০ মিটারের মধ্যে। বর্তমানে তা ১৪-১৬ মিটারে নেমে গিয়েছে। বিশেষ করে আলিপুর, পার্ক সার্কাস, বাবুঘাট এবং বালিগঞ্জ এলাকায় এই সমস্যা আরও প্রকট।

বাঘাযতীনের ঘটনা: সতর্কবার্তা শহরবাসীর জন্য

সম্প্রতি বাঘাযতীনে একটি চারতলা বাড়ি মাটি বসে হেলে পড়ে। এই ঘটনা পরিবেশবিদ এবং ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরের মাটি নরম হওয়ায় ভবিষ্যতে এরকম আরও ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

ডিপ টিউবওয়েলের প্রভাব এবং বেআইনি জলের উত্তোলন

কলকাতায় বর্তমানে প্রায় হাজারখানেক ডিপ টিউবওয়েল রয়েছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “নতুন করে ডিপ টিউবওয়েল বসানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। তবে বেআইনি ভাবে অনেকেই ভূগর্ভস্থ জল তুলছেন। পুরসভা এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াবে।”

পূর্ব কলকাতা জলাভূমি: সংকটের অন্য নাম

পূর্ব কলকাতার জলাভূমি এলাকায় নতুন জনবসতি গড়ে ওঠার ফলে সেখানে ভূগর্ভস্থ জলস্তর দ্রুত নামছে। পুরসভার পাইপলাইন না থাকায় বাসিন্দারা ভূগর্ভস্থ জলের উপর নির্ভর করছেন। এর ফলে জলাশয় ও পুকুর শুকিয়ে যাচ্ছে।

সমাধানের উপায় কী?

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, কলকাতায় ডিপ টিউবওয়েলের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করা উচিত। শহরের জল সরবরাহ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে হবে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণ এবং ভূগর্ভে রিচার্জের উদ্যোগ নিতে হবে। বাড়ি নির্মাণের আগে মাটি পরীক্ষার উপরও জোর দেওয়া উচিত।

ভূগর্ভস্থ জলের স্তর কমে যাওয়া কলকাতার ভবিষ্যতের জন্য বড় বিপদের কারণ হতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে সময়মতো পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। শহরবাসীর সচেতনতা এবং প্রশাসনের উদ্যোগই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!