Kaushiki Amavasya 2025 In Tarapith : রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে কৌশিকী অমাবস্যা। প্রতি বছর এই বিশেষ তিথিতে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার তারাপীঠে লক্ষাধিক ভক্ত সমবেত হন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই তুঙ্গে প্রস্তুতি, মন্দির চত্বর সেজে উঠেছে নতুন রূপে। ভক্তদের সুরক্ষার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

নিরাপত্তায় নজিরবিহীন কড়াকড়ি
তারাপীঠে এই বিশেষ দিনে ভক্ত সমাগম সামাল দিতে মোতায়েন থাকছেন প্রায় ১৫০০ পুলিশকর্মী, সঙ্গে ৫০০ আধিকারিক এবং ২০০০ সিভিক কর্মী। গোটা এলাকা জুড়ে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এছাড়াও প্রতিটি মোড়ে বসানো হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। অপ্রতিকর ঘটনা রুখতে পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে একাধিক পদক্ষেপ।
ভক্তদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা
➡ মন্দির চত্বর সাজানো হয়েছে আলো ও ফুলের শোভায়।
➡ ভক্তদের সুবিধার্থে বসানো হয়েছে জায়ান্ট স্ক্রিন, যাতে দূরে থাকা ভক্তরাও সরাসরি মায়ের আরতি ও পূজা দেখতে পারেন।
➡ প্রশাসন থেকে ভক্তদের জন্য পানীয় জল, বিশ্রামের ব্যবস্থা ও মেডিক্যাল ক্যাম্প রাখা হয়েছে।
কৌশিকী অমাবস্যার তাৎপর্য
পুরাণ মতে, এই দিনে মা তারা কৌশিকী রূপে আবির্ভূত হয়ে শুম্ভ-নিশুম্ভ অসুরদের বিনাশ করেছিলেন। তাই এই তিথির নাম কৌশিকী অমাবস্যা। সাধক বামাক্ষ্যাপাও ১২৭৪ বঙ্গাব্দে এই অমাবস্যাতেই তারাপীঠ মহাশ্মশানে শ্বেতশিমূল বৃক্ষতলে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন এবং ধ্যানমগ্ন অবস্থায় মা তারার আবির্ভাব পান।
মা তারা দশ মহাবিদ্যার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা, আর কৌশিকী রূপ সেই মহাশক্তিরই এক বিশেষ প্রকাশ।
তারাপীঠে ভক্ত সমাগম
প্রতি বছর এই দিনে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও সারা দেশ থেকে ভক্তরা আসেন মা তারার দর্শনে। ট্রেন, বাস এবং ব্যক্তিগত গাড়িতে ভরে ওঠে তারাপীঠের রাস্তাঘাট। ব্যবসায়ীদেরও জমজমাট ভিড় হয় এই সুযোগে।

কৌশিকী অমাবস্যা কেবলমাত্র ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও বাংলার অন্যতম প্রধান তিথি। তারাপীঠে এই দিন ভক্তদের অপরিসীম বিশ্বাস ও আস্থার প্রতিফলন ঘটে। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, এই দিনে মা তারার আরাধনা করলে জীবনের সব বাধা-বিপত্তি দূর হয় এবং মনোবাসনা পূর্ণ হয়।