নিজস্ব প্রতিবেদন | কলকাতা, ১২ জুলাই, ২০২৫
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়ে হুমকি, ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ। কাঞ্চন মল্লিক এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের এক চিকিৎসক। বুধবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার সূত্রপাত হলেও, বৃহস্পতিবার এবিপি লাইভ বাংলার মুখোমুখি হয়ে সমস্ত ঘটনার বিবরণ দিলেন শ্রীময়ী নিজে।
শ্রীময়ী জানান, “আমার দিদা ১০ দিন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি ছিলেন। চিকিৎসকরা খুবই আন্তরিকভাবে চিকিৎসা করেছেন। আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের ধন্যবাদও জানিয়েছিলাম। দিদা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর বুধবার ছিল রুটিন চেক-আপ। সেই কারণেই আমরা ওঁকে নিয়ে গিয়েছিলাম স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। প্রথমে ট্রপিক্যাল বিভাগে দেখানো হয়। পরে সেখান থেকে মেডিসিন বিভাগে পাঠানো হয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অত্যন্ত বিরক্তির সঙ্গে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন। রোগীকে দেখতে চাইছিলেন না। তাঁর ব্যবহার ছিল অপ্রত্যাশিত। আমরা চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু প্রশ্ন করতেই উনি টেবিল চাপড়াচ্ছেন, আমার গা ঘেঁষে এসে কথা বলছেন। এটা কি গ্রহণযোগ্য?”
শ্রীময়ীর সাফ বক্তব্য, “রাজনীতির প্রভাব খাটালে আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখাতাম না। চেম্বারে গিয়ে দেখাতাম। যদি প্রভাব খাটাতাম, তাহলে দিদার চিকিৎসা ১০ দিন মেডিক্যাল কলেজে চলত না। সব জায়গায় রাজনীতি খাটে না। কোনও বিশেষ সুবিধা নিইনি, তাহলে দুর্ব্যবহার সহ্য করব কেন?”
এই ঘটনায় রাজনীতির ছায়া পড়েছে এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। কাঞ্চন মল্লিক তৃণমূল বিধায়ক হওয়ায় বিরোধীরা ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে, তবে কি তাঁর পদ ব্যবহার করেই চিকিৎসকদের ‘বদলি’ বা ভয় দেখানোর চেষ্টা হয়েছিল?
এ বিষয়ে শ্রীময়ীর বক্তব্য, “চিকিৎসককে হুমকি দেওয়া বা বদলির ভয় দেখানো— এসব ভিত্তিহীন। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে। আমি কাউকে দোষারোপ করছি না, কিন্তু প্রশ্ন তোলার অধিকার তো থাকা উচিত!”
এই ঘটনার জেরে হাসপাতালে উপস্থিত অন্যান্য রোগী ও তাঁদের পরিবার সমস্যায় পড়েছিলেন বলেও খেদ প্রকাশ করেছেন শ্রীময়ী। তিনি বলেন, “আমরা চাই না আমাদের জন্য অন্যরা সমস্যায় পড়ুক। কিন্তু চিকিৎসকের এমন ব্যবহারে আমরা ব্যথিত।”
এই মুহূর্তে সরকারি মহলে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে কিনা, তা নিয়েও ধোঁয়াশা। তবে ঘটনাটি এখন জোর চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে।
https://www.facebook.com/share/r/16kbwVnHuX