Ad_vid_720X90 (1)
Advertisment
আজ জয়া একাদশী ব্রত: জেনে নিন এর মাহাত্ম্য, উপবাস বিধি ও পৌরাণিক কাহিনি

আজ জয়া একাদশী ব্রত: জেনে নিন এর মাহাত্ম্য, উপবাস বিধি ও পৌরাণিক কাহিনি

জয়া একাদশী হিন্দু ধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক উপবাস ব্রত। বিশ্বাস করা হয়, এই পবিত্র ব্রত পালনের মাধ্যমে পাপ মোচন হয় এবং ভক্তরা অতৃপ্ত আত্মা, প্রেতাত্মা বা অন্য অশুভ শক্তি থেকে রক্ষা পান। শাস্ত্র মতে, যারা নিষ্ঠার সঙ্গে এই ব্রত পালন করেন, তারা বৈকুণ্ঠ ধামে স্থান লাভ করেন।

🔹 জয়া একাদশী ব্রতের মাহাত্ম্য

জয়া একাদশী মাঘ মাসের শুক্লপক্ষে পালন করা হয়। এই দিনে শ্রীহরি বিষ্ণুর পূজা ও উপবাস করলে জীবনে পুণ্যলাভ হয় এবং সকল পাপ ও বাধা দূর হয়। বলা হয়, এই ব্রত পালনের ফলে ভূত-প্রেতের দোষ কেটে যায় এবং জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকেও মুক্তি মেলে।

🔹 জয়া একাদশী ব্রত ও পূজার বিধি

জয়া একাদশী ব্রতের সময় পালনীয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম রয়েছে:

দশমী তিথিতে প্রস্তুতি: ব্রতধারীকে একাদশীর আগের দিন অর্থাৎ দশমী তিথিতে সাত্ত্বিক আহার গ্রহণ করতে হয়। পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল এবং তামসিক খাদ্য গ্রহণ করা নিষিদ্ধ।

একাদশী তিথির মূল উপবাস বিধি:
1️⃣ ভোরবেলা উঠে গঙ্গাস্নান বা শুদ্ধজলে স্নান করুন।
2️⃣ শ্রীহরি বিষ্ণুর মূর্তি বা ছবি সামনে রেখে ধূপ, দীপ, ফুল ও পঞ্চামৃত দিয়ে পূজা করুন।
3️⃣ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম জপ করুন ও ভজন- কীর্তন করুন।
4️⃣ রাতে জাগরণ (জাগরন) করুন এবং ভগবানের মহিমা কীর্তন করুন।

দ্বাদশী তিথিতে উপবাস ভঙ্গ:
দ্বাদশীর দিন ব্রাহ্মণ বা দরিদ্র মানুষকে খাদ্যদান ও দান-ধর্ম করে উপবাস ভঙ্গ করতে হয়।

🔹 জয়া একাদশী ব্রতের পৌরাণিক কাহিনি

প্রাচীন কালে, স্বর্গলোকে দেবরাজ ইন্দ্রের সভায় এক মহা উৎসব চলছিল। সেখানে গন্ধর্বগণ সংগীত পরিবেশন করছিলেন এবং গন্ধর্ব কন্যারা নৃত্য করছিলেন। এই উৎসবে মাল্যবান নামে এক সুদর্শন গন্ধর্ব ছিলেন, যিনি অপূর্ব কণ্ঠে সংগীত পরিবেশন করতেন। অন্যদিকে, পুষ্যবতী নামের এক সুন্দরী গন্ধর্ব কন্যা নৃত্যরত ছিলেন।

মাল্যবান ও পুষ্যবতী একে অপরকে দেখে মোহিত হয়ে পড়েন এবং তাদের গানের ও নৃত্যের তাল কেটে যায়। দেবরাজ ইন্দ্র এতে ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের অভিশাপ দেন যে, তারা স্বর্গ থেকে বিচ্যুত হয়ে নরকযন্ত্রণা ভোগ করবেন।

অভিশাপবশত তারা নরকে নিক্ষিপ্ত হন এবং দীর্ঘদিন কষ্ট ভোগ করেন। ঠিক সেই সময় একাদশী তিথি উপস্থিত হয়। তারা অনাহারে থেকে শুধুমাত্র একবার ফল গ্রহণ করেন এবং সারারাত অনুশোচনায় ভগবান বিষ্ণুর নাম স্মরণ করেন।

এভাবে, অজান্তেই তারা জয়া একাদশী ব্রত পালন করেন। ফলস্বরূপ, অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে তারা পুনরায় স্বর্গে ফিরে যান।

🔹 জয়া একাদশীর উপকারিতা ও গুরুত্ব

✅ এই ব্রত পালন করলে সমস্ত পাপ নাশ হয়।
✅ অতৃপ্ত আত্মা বা প্রেত-দোষ থেকে মুক্তি মেলে।
✅ সংসারে সুখ ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
✅ জন্ম-মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়।
✅ এই ব্রত পালন করলে স্বর্গপ্রাপ্তি নিশ্চিত হয়।

জয়া একাদশী ব্রত পালন শুধু আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, মানসিক ও শারীরিক পরিশুদ্ধির জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ম মেনে উপবাস ও পূজা করলে জীবনে শুভফল লাভ করা যায়। তাই, এই পবিত্র দিনে ভগবান বিষ্ণুর আরাধনা করুন এবং পবিত্র জীবনযাত্রা অনুসরণ করুন।

📌 জয়া একাদশী পালন করুন, কল্যাণ লাভ করুন! 🙏✨

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!