দিঘায় তৈরি জগন্নাথধামে মুগ্ধ বাংলা, আর সেই আবহে অভিনব উদ্যোগ ভাতারের শিক্ষকের। তাঁতের শাড়ি ও গামছা দিয়ে তৈরি করলেন জগন্নাথদেবের মূর্তি। সঙ্গে বলভদ্র ও সুভদ্রাও।
রথযাত্রা আসতেই জগন্নাথভক্তদের মধ্যে চরম উন্মাদনা। এবার সেই উৎসবকে ঘিরেই দারুণ বার্তা দিলেন পূর্ব বর্ধমানের শিল্পী তথা শিক্ষক তপন দাস। পরিবেশ সংরক্ষণ ও বাংলার হারিয়ে যাওয়া হস্তশিল্পকে কুর্নিশ জানাতে তিনি তৈরি করলেন সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার মূর্তি। আর তা গড়ে তুললেন একেবারে ঘরোয়া উপকরণে—বাংলার গামছা, তাঁতের শাড়ি, সুতো, সুতলির দড়ি, পিচবোর্ড প্রভৃতি ব্যবহার করে।
শিল্পী তপন দাস ভাতারের রায়রামচন্দ্রপুর নীরদবরণ বিদ্যাপীঠের শিক্ষক। দীর্ঘ এক মাস ধরে তিনি এই মূর্তি তৈরির কাজে যুক্ত ছিলেন। তাঁর কথায়, “বাংলার হস্তশিল্পের পরিচয় আর পরিবেশের বার্তা—এই দুইকে একসূত্রে বাঁধতেই এই প্রয়াস। রথযাত্রার আগে প্রভু জগন্নাথের আবির্ভাব বাংলার কাপড়ে—এটাই আমার শ্রদ্ধার্ঘ্য।”
এই কাজের মধ্যে দিয়েই তিনি তুলে ধরেছেন বাংলার ঐতিহ্যকে। শুধু শিল্পনৈপুণ্য নয়, সামাজিক বার্তাও পৌঁছে দিয়েছেন। এর আগেও তপন দাস কলার পাতা, চটের বস্তা, ওষুধের প্যাকেট, এমনকি ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র ব্যবহার করে তৈরি করেছেন সরস্বতী প্রতিমা, ভুট্টা দিয়ে দুর্গা, ডিজনিল্যান্ড, কার্জন গেট, দক্ষিণেশ্বর মন্দির কিংবা কেদারনাথের প্রতিরূপ। এই ব্যতিক্রমী কল্পনা ও শিল্পসৃষ্টির জন্য তিনি পেয়েছেন বহু সম্মান। তাঁর নাম উঠেছে ইন্ডিয়া বুকস অফ রেকর্ডস-এ।
দিঘায় তৈরি জগন্নাথধাম ও এই অভিনব মূর্তিশিল্প মিলে যেন রথযাত্রার আগে বাংলাকে ভরিয়ে তুলেছে জগন্নাথভক্তির আবহে। তপন দাস জানাচ্ছেন, ভবিষ্যতেও এই ভাবনার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নতুন কিছু করার ইচ্ছা রয়েছে তাঁর।