একুশে পা নিউজ ডেস্ক ✍
হৃদরোগ নিয়ে মানুষের ভয়, আলোচনা আর উদ্বেগের শেষ নেই। বয়স ২০ হোক বা ৬০– হার্টের অসুখ কাউকে ছাড়ে না। সাধারণত কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ বা আর্টারি ব্লকেজকে হার্ট অ্যাটাকের বড় কারণ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু আরও এক নীরব ঘাতক আছে— উচ্চ পটাশিয়াম বা হাইপারক্যালেমিয়া— যা হঠাৎ করেই প্রাণঘাতী হতে পারে।
কেন পটাশিয়াম জরুরি, আর কখন তা বিপজ্জনক?
শরীরের ইলেকট্রিক্যাল সংকেত ও হৃদস্পন্দনের রিদম ঠিক রাখতে পটাশিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত পটাশিয়াম হৃদস্পন্দনের স্বাভাবিক ট্র্যাক নষ্ট করে দিয়ে অ্যারিথমিয়া বা হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ঘটাতে পারে। সামান্য ভারসাম্যহীনতাও ঝুঁকি তৈরি করে।
হঠাৎ পটাশিয়াম বেড়ে যায় কেন?
কার্ডিয়োলজিস্ট ডঃ অঞ্জলি মেহতার মতে—
- ভারতের সাধারণ খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন কলা ও আলু থাকে, যা পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ।
- কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কলা-আলু খাওয়ার আগে সাবধান হওয়া দরকার।
- জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাইপারক্যালেমিয়ার কারণ।
- দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
- ডায়াবেটিসজনিত কিডনি রোগের হার ভারতে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
- উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা যারা ACE ইনহিবিটর বা ARB ওষুধ নেন, তাঁদেরও ঝুঁকি বেশি।
- কিছু অ্যান্টিবায়োটিক এবং রক্ত পাতলা ওষুধও পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়াতে পারে।
যেসব খাবারে পটাশিয়াম বেশি – সতর্ক থাকুন

অতিরিক্ত পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বা সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ কিছু খাবার:
- এপ্রিকট ও অন্যান্য শুকনো ফল
- অ্যাভোকাডো, আপেল, কমলালেবু
- কলা
- শাকসবজি: পালং শাক, শসা, ঝুকিনি, বেগুন, কুমড়ো
- গাজর, আলু, মিষ্টি আলু
- শিম ও শুঁটি জাতীয় খাবার
কারা বেশি ঝুঁকিতে?
- কিডনি রোগী
- ডায়াবেটিসজনিত কিডনি সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি
- উচ্চ রক্তচাপের রোগী
- ACE ইনহিবিটর বা ARB গ্রহণকারী
- রক্ত পাতলা বা কিছু অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণকারী
কীভাবে রক্ষা পাবেন?
- নিয়মিত রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা পরীক্ষা করুন।
- ঝুঁকিতে থাকলে পটাশিয়াম-সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ কমান।
- প্রয়োজন অনুযায়ী ডাক্তারের পরামর্শে ডায়েট প্ল্যান তৈরি করুন।
- হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ, অতিরিক্ত ক্লান্তি— এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে যান।
💡 মনে রাখবেন: পটাশিয়াম শরীরের জন্য অপরিহার্য হলেও এর অতিরিক্ত মাত্রা আপনার হৃদপিণ্ডের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে। সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন।