দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে বাকি !!

Days
Hours
Minutes
Seconds

আজ হরিয়ালী তীজ: বিবাহিত নারীদের জীবনে সৌভাগ্যের প্রতীক এই শ্রাবণ উৎসব

আজ হরিয়ালী তীজ: বিবাহিত নারীদের জীবনে সৌভাগ্যের প্রতীক এই শ্রাবণ উৎসব

আসুন জেনে নিই, হরিয়ালী তীজ কী এবং কেন পালন করা হয়?

হরিয়ালী তীজ (বা শ্রাবণী তীজ) প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে পালিত হয়। এই দিনে দেবী পার্বতী ও মহাদেবের মিলন হয়েছিল বলেই এটি অত্যন্ত শুভ দিন হিসেবে ধরা হয়। বিশেষ করে বিবাহিত নারীরা এই দিনটি উপবাস ও পূজা করে পালন করেন, যেন তাঁদের দাম্পত্যজীবন সুখী ও দীর্ঘায়ু হয়।

বর্ষার আগমনে প্রকৃতি যেমন সবুজে আচ্ছাদিত হয়ে ওঠে, তেমনই নারীরাও এই দিনে নতুন পোশাক, অলঙ্কার, মেহেন্দি, ও সিঁদুরে সেজে ওঠেন। এটি এক ধরনের “নারীত্ব ও প্রকৃতির মিলন উৎসব”


হরিয়ালী তীজের পূর্বসন্ধ্যায় “সিঞ্জারা” পালনের রীতি

তীজের এক দিন আগে সিঞ্জারা পালন করা হয়, যেখানে শ্বশুরবাড়ি থেকে পুত্রবধূকে নতুন জামা, গয়না, মেহেন্দি, আলতা ও মিষ্টি পাঠানো হয়। এদিন মেয়েরা হাতে মেহেন্দি, পায়ে আলতা ও রঙিন পোশাকে নিজেদের সাজায়। এটি সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।


পূজার নিয়ম ও রীতি (Hariyali Teej Pujan Vidhi)

শিবপুরাণ অনুযায়ী, এই দিনে দেবী পার্বতী ও মহাদেবের মিলনের স্মরণে গৃহে বা মন্দিরে পূজা করা হয়।
পূজার রীতি:

  1. ঘর পরিষ্কার করে ফুল ও মণ্ডপ দিয়ে সাজান।
  2. শিব, পার্বতী, গণেশ ও দেবী সখীদের মূর্তি স্থাপন করুন।
  3. ষোড়শোপচার (১৬টি উপাচার) দ্বারা পূজা করুন।
  4. সারারাত জেগে ভজন, কীর্তন ও স্তোত্র পাঠে ব্রত রাখা হয়।

হরিয়ালী তীজের দিনে যে তিনটি কাজ এড়িয়ে চলা উচিত

এই দিনে নারীরা তিনটি ব্রত নেন—

  1. স্বামীর প্রতি অবিশ্বস্ততা না করা
  2. মিথ্যাচার ও খারাপ ব্যবহার না করা
  3. অন্যকে অপমান বা কষ্ট না দেওয়া

ধর্মীয় প্রেক্ষাপট

পুরাণ মতে, দেবী পার্বতী ১০৮ বছর তপস্যা করে মহাদেবকে স্বামী রূপে লাভ করেন। শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয় দিন, অর্থাৎ হরিয়ালী তীজের দিনেই মহাদেব তাঁকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ করেন। সেই থেকেই এই দিনটি বিবাহিত নারীদের জন্য আশীর্বাদপূর্ণ ও শুভ বলে বিবেচিত হয়।

 হরিয়ালী তীজ

হরিয়ালী তীজ কোথায় ও কারা বেশি পালন করেন?

হরিয়ালী তীজ মূলত উত্তর ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু উৎসব, এবং এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ও জনপ্রিয়তা দেখা যায় নিম্নলিখিত রাজ্য ও অঞ্চলে:

🟢 ১. রাজস্থান:

এই উৎসবটির সবচেয়ে গভীর সাংস্কৃতিক ছাপ পাওয়া যায় রাজস্থানে। এখানে মেয়েরা নতুন পোশাক পরে, মেহেন্দি দিয়ে হাতে অলংকরণ করে এবং গ্রামীণ অঞ্চলে দোলনায় চড়ে, লোকগান গেয়ে উৎসব পালন করেন। অনেকে এই দিন শোভাযাত্রা ও মেলার আয়োজনও করে।

🟢 ২. উত্তরপ্রদেশ (বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চল ও বৃন্দাবন-আগ্রা এলাকা):

উত্তরপ্রদেশের অনেক জায়গায় বিশেষ করে বৃন্দাবনে এটি রাধা-কৃষ্ণের প্রেম এবং পার্বতী-শিবের মিলন উৎসব হিসেবে বিবেচিত হয়। মন্দিরগুলোতে বিশেষ পূজা, প্রসাদ বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

🟢 ৩. বিহার ও ঝাড়খণ্ড:

এই অঞ্চলগুলিতে হরিয়ালী তীজ সাত্ত্বিক উপবাসদাম্পত্য সুখের কামনায় পালিত হয়। মহিলারা এই দিন শিব ও পার্বতীর পূজা করেন এবং রাত্রি জেগে ভজন করেন।

🟢 ৪. মধ্যপ্রদেশ (বিশেষ করে মালওয়া ও বুন্দেলখণ্ড অঞ্চল):

এখানেও তীজকে বিবাহিত নারীদের সৌভাগ্য ও সন্তান কামনার উৎসব হিসেবে পালন করা হয়। নারীরা স্বামীর দীর্ঘ জীবন ও সুস্থতার জন্য নির্জলা উপবাস পালন করেন।

🟢 ৫. দিল্লি ও হরিয়ানা:

নগর সংস্কৃতির প্রভাব থাকলেও, বিশেষ করে হরিয়ানার গ্রামীণ সমাজে হরিয়ালী তীজ অত্যন্ত মর্যাদার সঙ্গে পালিত হয়। অনেক জায়গায় এই উপলক্ষে “তীজ মেলা” বা মেলারও আয়োজন হয়।

🪔 ekusheypa.com পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে রঙিন, আনন্দময় ও সৌভাগ্যপূর্ণ হরিয়ালী তীজের শুভেচ্ছা।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
আরও পড়ুন
error: Content is protected !!