গ্যাস-অম্বল বাঙালির সাধারণ সমস্যা। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ঝাল-মশলাযুক্ত খাবার এবং দ্রুত খাওয়া এই সমস্যার মূল কারণ। দীর্ঘস্থায়ী গ্যাসের সমস্যা শুধু অস্বস্তি তৈরি করে না, এটি বদহজম, বুক জ্বালা এবং আলসারের মতো গুরুতর সমস্যার কারণও হতে পারে। তবে কিছু সহজ উপায় মেনে চললে হজমশক্তি বাড়ানো সম্ভব এবং গ্যাস-অম্বল থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
গ্যাস-অম্বলের প্রধান কারণ
- অত্যধিক তেল-মশলা ও ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া
- জল কম পান করা
- অনিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস
- পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব
- অতিরিক্ত চা বা কফি পান
- মানসিক চাপ ও উদ্বেগ
হজমশক্তি বাড়ানোর সহজ উপায়
১. সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
প্রতিদিন খাবারের তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার (সবজি, ফল, শস্য), প্রোটিন (ডাল, মাছ, মাংস), এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (বাদাম, অলিভ অয়েল) রাখুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন, কারণ এসব খাবার হজমে সমস্যা তৈরি করে।
২. পর্যাপ্ত জল পান করুন
শরীরে জলের ঘাটতি থাকলে হজমক্রিয়া ধীর হয়ে যায়, ফলে গ্যাসের সমস্যা বাড়তে পারে। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস জল পান করুন।
৩. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম বা হালকা ব্যায়াম করলে বিপাকক্রিয়া সক্রিয় থাকে এবং হজম ভালো হয়।
৪. ধীরে ও ভালোভাবে চিবিয়ে খান
খাবার ধীরে ধীরে ও ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে পাচনতন্ত্রের উপর চাপ কম পড়ে, ফলে গ্যাস-অম্বলের সম্ভাবনা কমে।
৫. অতিরিক্ত চা-কফি এড়িয়ে চলুন
অতিরিক্ত চা বা কফি পান পাকস্থলীর অম্লত্ব বাড়িয়ে তোলে, যা গ্যাস-অম্বল সৃষ্টি করে।
গ্যাস-অম্বল দূর করার ঘরোয়া উপায়
১. জিরা জল পান করুন
এক চামচ জিরা জলে ফুটিয়ে নিয়ে সেই জল ঠান্ডা করে পান করুন। এটি হজমশক্তি বাড়ায় ও গ্যাসের সমস্যা কমায়।
২. আদা ও মধু খান
এক চামচ আদার রসের সাথে এক চামচ মধু মিশিয়ে খেলে গ্যাস-অম্বল কমে এবং হজম ভালো হয়।
৩. লেবু-জল পান করুন
এক গ্লাস গরম জলে লেবুর রস ও এক চিমটি লবণ মিশিয়ে খেলে হজমশক্তি বাড়ে ও গ্যাসের সমস্যা কমে।
৪. মৌরি চিবিয়ে খান
খাওয়ার পর মৌরি চিবিয়ে খেলে হজমশক্তি ভালো থাকে এবং গ্যাস তৈরি হয় না।
চিকিৎসকের পরামর্শ কবে নেবেন?
- যদি গ্যাস-অম্বল দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে
- বুক জ্বালা বা পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব হয়
- খাবারের পর অস্বস্তি বা বমি ভাব হয়
- ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে থাকে
শেষ কথা
সুস্থ হজমশক্তি বজায় রাখতে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় নিয়মিত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। যদি নিয়মিতভাবে হজম সমস্যা হয়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। দৈনন্দিন কিছু সহজ পরিবর্তন গ্যাস-অম্বল কমাতে ও সুস্থ জীবনযাপন করতে সহায়তা করতে পারে।
📌 আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন এবং শেয়ার করুন এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য!