Ad_vid_720X90 (1)
Advertisment
ফলহারিণী অমাবস্যা ২০২৫: দেবী কালিকার আরাধনার শুভ তিথি, ফলদাতা ও কর্মফল নাশিনী মাতৃরূপের মাহাত্ম্য

ফলহারিণী অমাবস্যা ২০২৫: দেবী কালিকার আরাধনার শুভ তিথি, ফলদাতা ও কর্মফল নাশিনী মাতৃরূপের মাহাত্ম্য

২৬ মে ২০২৫, সোমবার (১১ জ্যৈষ্ঠ) পালিত হবে পবিত্র ফলহারিণী অমাবস্যা। হিন্দু ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে শক্তির দেবী কালিকাকে ফলহারিণী রূপে পূজা করা হয়। এই দিনে কালীমায়ের আরাধনা করলে জীবনের সকল কর্মফল হরণ হয় এবং ভক্তের বাসনা পূর্ণ হয়—এমন বিশ্বাস বহু প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে।

এই বছরের তিথি ও সময়

ফলহারিণী অমাবস্যা শুরু: ২৬ মে, সকাল ১১:০৭ মিনিট
শেষ: ২৭ মে, সকাল ৮:৪৫ মিনিট


ফলহারিণী মানে কী?

‘ফলহারিণী’ অর্থাৎ যিনি ফল হরণ করেন। দেবী কালিকাকে এই রূপে পূজা করা হয় কারণ তিনি ভক্তের কুকর্মের অশুভ ফল নাশ করে তাকে কল্যাণের পথে পরিচালিত করেন। তিনি শুধু ভয়ঙ্করী নন, অপার করুণাময়ীও বটে।

এই দিনে দেবী পূজার মাহাত্ম্য

ফলহারিণী কালীপুজোর দিন দেবীকে বিভিন্ন মরশুমি ফল নিবেদন করে পুজো করা হয়। ভক্তরা মনে করেন, যদি নির্দিষ্ট কোনও ফল নিবেদন করে কোনও বাসনা ব্যক্ত করা হয়, তবে তা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সেই ফল ভক্ষণ করা নিষেধ। বাসনা পূর্ণ হলে সেই ফল গঙ্গাজলে বিসর্জন দেওয়া হয়।

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ ও ষোড়শী পূজার ঐতিহাসিক গুরুত্ব

এই তিথিতে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর সহধর্মিণী শ্রীমা সারদাকে ষোড়শীজ্ঞানে দেবীরূপে পূজা করেছিলেন। এটি ছিল তন্ত্রশাস্ত্র মতে এক গভীর আধ্যাত্মিক সাধনার চূড়ান্ত প্রকাশ। স্ত্রীর মধ্যে দেবীর রূপ কল্পনা করে তিনি ষোড়শোপচারে পূজা করেছিলেন, যা পরবর্তীকালে এক যুগান্তকারী ধর্মীয় ও সামাজিক বার্তা বহন করে।

কোথায় কোথায় পালিত হয়?

এই বিশেষ অমাবস্যা তিথিতে দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট, তারাপীঠ, নবদ্বীপ, সহ গোটা বাংলার নানা কালীমন্দিরে বিশেষ পুজো ও তন্ত্রসাধনা হয়। বহু গৃহস্থবাড়িতেও এই দিনে দেবী আরাধনা করা হয়।


ফলহারিণী কালীপুজোর তাৎপর্য

  • কর্মফল হরণ: সাধকরা এদিন তাঁদের কর্মফল দেবীর চরণে অর্পণ করেন।
  • বাসনা পূর্ণি: দেবী ভক্তদের মানসিক ও পার্থিব বাসনা পূর্ণ করেন।
  • আধ্যাত্মিক উন্নতি: সঠিক নিয়মে পুজো করলে জীবনের অন্ধকার দূর হয় এবং শুভতার আলোয় পথ প্রশস্ত হয়।
  • মুক্তির পথ: কালীমার আরাধনায় মোক্ষলাভ সম্ভব—এমনই বিশ্বাস শাস্ত্রমতে।

বাংলার বাইরের রূপ

উত্তর ভারতে এই অমাবস্যা পরিচিত বট অমাবস্যা নামে। নারীরা এই দিনে বটগাছের পুজো করেন স্বামীর দীর্ঘজীবন কামনায়। এই ব্রতের মধ্যেও গূঢ়ভাবে দেবী মাতৃরূপ ও শক্তির আরাধনা জড়িয়ে আছে।

ফলহারিণী অমাবস্যা কেবল একটি ধর্মীয় তিথি নয়, এটি এক আধ্যাত্মিক যাত্রার প্রতীক। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন এবং ষোড়শী পূজা এই তিথিকে করেছে আরও বিশেষ। আমাদের কুকর্ম ও অশুভ শক্তির বিনাশ এবং আত্মিক কল্যাণের আশায় এদিনে ফলদায়িনী দেবীর আরাধনা আমাদের জীবনে বয়ে আনতে পারে সত্যিকারের শান্তি ও সমৃদ্ধি।

🙏 জয় মা কালিকা 🙏

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!