আজ, ১৫ জুলাই মঙ্গলবার, সকাল থেকেই দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (DVC) পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে প্রায় ৪৫,০০০ কিউসেক জল ছাড়তে শুরু করেছে। যার মধ্যে পাঞ্চেত ড্যাম থেকে ছাড়া হয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার কিউসেক এবং মাইথন থেকে ৯ হাজার কিউসেক। এর ফলে দামোদর নদের তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা তীব্র হয়েছে।
ডিভিসি’র এই জল ছাড়ার ফলে ইতিমধ্যে হাওড়ার আমতা, উদয়নায়ণপুর, হুগলির খানাকুল, আরামবাগ এবং পূর্ব বর্ধমানের বেশ কিছু এলাকা প্লাবনের মুখে। সেচ দফতরের পক্ষ থেকে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারেজে জলস্তর বাড়ছে এবং প্রয়োজনে সেখান থেকেও অতিরিক্ত জল ছাড়া হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
🌧️ ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ, ধানবাদ, বোকারোর মতো উচ্চ দামোদর উপত্যকায় টানা বৃষ্টির জেরে জলাধারগুলি উপচে পড়ছে। অতিরিক্ত জল নিয়ন্ত্রণ করতেই ডিভিসি জল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ও প্রস্তুতি:
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে দশটি জেলার প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলেছেন। প্লাবিত বা সম্ভাব্য প্লাবনপ্রবণ এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হচ্ছে।
বিতর্কও জারি:
ডিভিসির এই ‘অবিলম্ব ও একতরফা’ জল ছাড়াকে ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে অভিযোগ, জল ছাড়ার পূর্বে তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও ডিভিসির এই পদক্ষেপকে ‘মানুষের তৈরি বন্যা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তবে DVC কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, তারা জল ছাড়ে কমিটির নির্দেশ অনুযায়ী—এই কমিটিতে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ঝাড়খণ্ড সরকার ও কেন্দ্রীয় জল কমিশনের প্রতিনিধি। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জলাধারে সঞ্চিত জল ও বৃষ্টির পূর্বাভাস বিচার করেই।
📌 সম্ভাব্য প্রভাবিত জেলা:
- হাওড়া
- হুগলি
- পূর্ব বর্ধমান
- পশ্চিম মেদিনীপুর
- বাঁকুড়া
- পুরুলিয়া
- দক্ষিণ ২৪ পরগনা
- বীরভূম
- পশ্চিম বর্ধমান
- নদিয়া

পাঠকের জন্য বিশেষ বার্তা:
✅ নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন যেন স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন।
✅ দুর্যোগের সময় সোশ্যাল মিডিয়া বা গুজবে কান না দিয়ে সরকারিভাবে জারি নির্দেশিকা মেনে চলুন।
✅ প্রয়োজনে স্থানীয় ব্লক অফিস ও সেচ দফতরে যোগাযোগ করুন।