দিঘা, পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, বর্তমানে নতুন এক আকর্ষণ উপস্থাপন করতে চলেছে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থা (ডিএসডিএ) তাদের নতুন প্রকল্পের আওতায় দিঘায় একটি অনন্য নেচার পার্ক নির্মাণ করছে, যা পর্যটকদের নতুন অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। শুধু সমুদ্রের সৌন্দর্য নয়, এবার দিঘা বেড়ে উঠবে প্রকৃতি প্রেমীদের জন্যও এক বিশেষ স্থান হিসেবে।
নেচার পার্কের উদ্ভাবনী উদ্যোগ
ডিএসডিএ এর উদ্যোগে নির্মিত এই নেচার পার্কটি বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে জগন্নাথ মন্দিরের বিপরীত দিকে, ঝাউবনে ঘেরা একটি প্রাকৃতিক বনাঞ্চলে। প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এটি হবে এক বিশেষ আকর্ষণ। মন্দির দর্শন করার পর, পর্যটকরা এখানে এসে প্রকৃতির সাথে মিশে এক শান্তিপূর্ণ সময় কাটাতে পারবেন।

একযোগে উদ্বোধন: মন্দির ও নেচার পার্ক
৩০ এপ্রিল, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত দিয়ে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হবে। একই দিনে, নেচার পার্কের প্রাথমিক অংশও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এটি দিঘার পর্যটন মানচিত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে এবং ধর্মীয় ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অনন্য সমন্বয় গড়ে তুলবে।
নেচার পার্কের বৈশিষ্ট্য
নেচার পার্কের প্রবেশদ্বারে দুটি জিরাফের মডেল স্থাপন করা হয়েছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করবে। পার্কে পেভার ব্লক দিয়ে তৈরি হাঁটাপথ থাকবে, যা দর্শনার্থীদের প্রকৃতির সাথে সান্নিধ্য প্রদান করবে। এছাড়া কংক্রিটের বসার জায়গা, পাখিদের জন্য ঝুলন্ত খাঁচা, এবং খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
জলাশয় ও পাখির কলকাকলি
পার্কের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হল একাধিক জলাশয়, যা পাখিদের আবাসস্থল হিসেবে কাজ করবে। পরিষ্কার করা জলাশয়গুলো এবং ছাঁটাই করা ঝোপঝাড়ে ভরা এই এলাকা পাখিদের কলকাকলি উপভোগ করার এক নিখুঁত স্থান হবে, যা পর্যটকদের জন্য এক শান্তিপূর্ণ অভিজ্ঞতা তৈরি করবে।
অতিরিক্ত সুবিধা ও উন্নয়ন
জগন্নাথ মন্দির এবং তার আশপাশের পরিবেশ আরও উন্নত করতে, জেলা পূর্ত দফতর রাস্তা সম্প্রসারণ ও সৌন্দর্যায়নের কাজ করছে। মন্দির থেকে পুরনো জগন্নাথ মন্দির পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে পেভার ব্লক বসানো হচ্ছে এবং বিশ্রামাগারও নির্মাণ করা হচ্ছে, যা পর্যটকদের আরামদায়ক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে।

প্রকল্পের বাজেট এবং পরিকল্পনা
নেচার পার্ক নির্মাণে ডিএসডিএ এক কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করেছে। বন দফতরের সহযোগিতায় প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এই পার্কের নকশা এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং প্রকৃতি সংরক্ষিত থাকে।
পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্ত
ডিএসডিএ-র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক বলেছেন, “জগন্নাথ মন্দির দর্শন করতে আসা পর্যটকরা যাতে এই নেচার পার্কে সময় কাটিয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই এই প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে। এটি ধর্মীয় ও প্রাকৃতিক অভিজ্ঞতার এক অনন্য সমন্বয় ঘটাবে।”
দিঘার জগন্নাথ মন্দির ও নেচার পার্কের যুগল উদ্যোগ পর্যটন শিল্পে নতুন এক যুগের সূচনা করবে। প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে, এটি দিঘাকে আরও আকর্ষণীয় ও বৈচিত্র্যময় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। ৩০ এপ্রিলের উদ্বোধনের দিনটির জন্য পর্যটকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।