Ad_vid_720X90 (1)
Advertisment
ডিপসিক: চিনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপ্লব এবং তার প্রভাব

ডিপসিক: চিনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিপ্লব এবং তার প্রভাব

আজকের বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, এবং এই প্রযুক্তি দ্বারা মানবজীবন পাল্টে যাচ্ছে। তবে, নতুন এক প্রযুক্তি বিপ্লবের সূচনা হয়েছে চিনে। “ডিপসিক” নামক চিনের এই নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি, যা মার্কিন প্রযুক্তি জগতের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। এটি কেবল চ্যাটজিপিটি বা গুগলের জেমিনির মতো AI সিস্টেমের সাথে তুলনা করা হচ্ছে, বরং তার থেকেও বেশি ক্ষমতাশালী এবং কার্যকরী। তবে, এর খরচ এবং লোকবল অনেক কম, যা ব্যবসা এবং প্রযুক্তি জগতে নতুন রূপ নিয়ে এসেছে।

ডিপসিক কী এবং কেন এটি বিশেষ?
ডিপসিক হল একটি চিনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেম, যা মার্কিন সংস্থা এনভিডিয়ার A-100 চিপের সাহায্যে কাজ করে। বিশেষভাবে, এই চিপটি AI প্রযুক্তি তৈরির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, আমেরিকা ও চিনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক সংঘাতের কারণে এই চিপের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু চিনের ডিপসিকের মালিক লিয়াং ওয়েনফেং বুদ্ধিমত্তার সাথে প্রচুর A-100 চিপ সংগ্রহ করে রেখেছিলেন, যার ফলে তিনি ডিপসিককে একটি শক্তিশালী AI প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তৈরি করতে সক্ষম হন। এর ফলে, মার্কিন AI প্ল্যাটফর্মগুলি, যেমন চ্যাটজিপিটি এবং গুগলের জেমিনি, এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

ডিপসিকের ক্ষমতা এবং খরচের তুলনা
ডিপসিকের কার্যক্ষমতা চ্যাটজিপিটি এবং অন্যান্য মার্কিন AI প্ল্যাটফর্মের তুলনায় অন্তত ১৪% বেশি। এটি শুধুমাত্র দক্ষতায় এগিয়ে নয়, বরং এর খরচও মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর থেকে ৯০-৯৫% কম। ভাবুন, যদি আপনি iPhone 16 Pro Max এর থেকে ভালো কোনো ফোন ৫ হাজার টাকায় পান, তাহলে কেমন হবে? ঠিক এমনটাই ঘটছে মার্কিন AI সংস্থাগুলির শেয়ার দরে। ডিপসিক তার খরচ কম রেখে সেরা প্রযুক্তি প্রদান করে, যা বিশ্ব বাজারে সাড়া ফেলেছে।

ডিপসিক: চিনের প্রযুক্তি উৎকর্ষতার প্রমাণ
ডিপসিকের উদ্ভাবন চিনের প্রযুক্তি শক্তি এবং বুদ্ধিমত্তার এক অনন্য প্রমাণ। ২০২৩ সালে তৈরি হওয়া এই প্রযুক্তি ইতোমধ্যে বিশ্বের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জগতে একটি বিপ্লব নিয়ে এসেছে। এর মাধ্যমে, চিন বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে, তারা প্রযুক্তির দুনিয়ায় মার্কিন সংস্থাগুলোর চেয়ে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই।

ডিপসিক ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধা এবং সতর্কতা
ডিপসিক ব্যবহারকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় উপহার। এটি ফ্রি, তবে চিনা প্রযুক্তি হওয়ায়, ব্যবহারকারীদের ফোন থেকে ডেটা চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতেই পারে। সুতরাং, এর ব্যবহারকারীরা সতর্ক থাকতে হবে এবং নিজেদের রিস্কে এটি ব্যবহার করতে হবে। তবে, ভবিষ্যতে এর আরও উন্নত সংস্করণ বের হলে, এটি প্রযুক্তির দুনিয়ায় এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করতে পারে।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ভবিষ্যত এবং ভারতের চ্যালেঞ্জ
ডিপসিকের উত্থান কেবল প্রযুক্তি জগতে প্রতিযোগিতার মাত্রা বাড়িয়েছে, বরং আগামী দশ বছরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠবে। ভারত এখনও AI প্রযুক্তির দুনিয়ায় পিছিয়ে রয়েছে। আমাদের দেশে পরিকাঠামো, দক্ষ কর্মী এবং অর্থের অভাব রয়েছে। যদি আমরা এই সময়ে প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে না চলতে পারি, তবে ভবিষ্যতে আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হারিয়ে যেতে পারি।


ডিপসিক আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে চিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির দুনিয়ায় কীভাবে মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সমান, বা তার থেকেও বেশি শক্তিশালী হতে পারে। আমাদের উচিত, এখন থেকেই AI প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা শুরু করা এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হওয়া। না হলে, আগামী প্রজন্মের কাছে প্রযুক্তির দুনিয়ায় পিছিয়ে পড়া আমাদের জন্য এক বড় ঝুঁকি হতে পারে।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!