ভারতে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কোভিড-১৯। সূত্র অনুযায়ী, দেশে ওমিক্রনের চারটি সাব-ভ্যারিয়েন্টের প্রায় ১,০০০-এরও বেশি সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যার মধ্যে রয়েছে JN.1, LF.7 এবং NB.1.8। যদিও এই খবর শুনে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই, চিকিৎসকদের মতে, বর্তমান স্ট্রেনগুলো তুলনামূলকভাবে অনেকটাই দুর্বল এবং রোগীরা সাধারণত মৃদু উপসর্গেই সুস্থ হয়ে উঠছেন।
উপসর্গ ও প্রাথমিক করণীয়:
এই নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলো সাধারণত গলা ব্যথা, হালকা জ্বর, নাক বন্ধ বা জল পড়া, ক্লান্তি ইত্যাদি মৃদু উপসর্গ তৈরি করছে। অধিকাংশ স্বাস্থ্যবান ব্যক্তি বাড়িতেই বিশ্রাম ও জলপান করে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
কারা ঝুঁকিপূর্ণ?
তবে কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন আবশ্যক। যেমন:
- যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে লিভার, কিডনি বা হার্টের সমস্যায় ভুগছেন
- ক্যানসারে আক্রান্ত
- ইমিউনো-সাপ্রেসিভ ওষুধ নিচ্ছেন (যেমন: অটোইমিউন ডিজঅর্ডার বা ট্রান্সপ্লান্ট রোগীদের)
এই ধরনের ব্যক্তিদের দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত যদি কোনো উপসর্গ দেখা যায়।
কী করবেন আপনি?
- ভিড় বা বাতাস চলাচলহীন স্থানে মাস্ক পরুন
- নিয়মিত হাত ধুতে থাকুন
- অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন
- ঘরের ভিতর পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন
- কোভিড টিকা এবং বুস্টার ডোজ আপডেট রাখুন
- উপসর্গ দেখা দিলে নিজেকে আলাদা রাখুন
সরকার ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত টেস্টিং, ওষুধ মজুদ এবং ভুয়ো তথ্য রোধে পদক্ষেপ নিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, “সতর্কতা জরুরি, আতঙ্ক নয়।”
শিশুদের নিয়ে বাড়তি সতর্কতা:
CMRI হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ডা. রুচি গোলাশ জানাচ্ছেন, “শিশুদের মধ্যে জ্বর, ক্লান্তি, হালকা শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলি গুরুতর নয়, তবুও অভিভাবকদের সাবধান হওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “গরমের ছুটিতে শিশুরা স্কুল থেকে বাইরে, তাই খেয়াল রাখুন তারা অপ্রয়োজনীয় ভিড়, ইনডোর গেম জোন, শপিং মল বা সিনেমা হলে যেন না যায়। উপসর্গ থাকলে বাড়িতেই বিশ্রামে রাখুন এবং যতটা সম্ভব নিরাপদ পরিবেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খেলাধুলা করান।”
এই মুহূর্তে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তবে গাফিলতিরও সুযোগ নেই। স্বাস্থ্য মেনে চলা, সচেতনতা এবং পরস্পরের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণই পারে এই সংক্রমণের তরঙ্গকে রুখে দিতে।