চিকুনগুনিয়া: ২০ বছর পর আবার বিশ্বজুড়ে মহামারীর আশঙ্কা! সতর্ক করল WHO

চিকুনগুনিয়া: ২০ বছর পর আবার বিশ্বজুড়ে মহামারীর আশঙ্কা! সতর্ক করল WHO

নয়াদিল্লি, ২৪ জুলাই ২০২৫:
দীর্ঘ ২০ বছর পর বিশ্ব আবার আতঙ্কে! ভয়ঙ্করভাবে ফিরে এসেছে মশাবাহিত ভাইরাল রোগ চিকুনগুনিয়া (Chikungunya)। তীব্র জ্বর, জয়েন্টে ব্যথা ও শারীরিক দুর্বলতা—এই উপসর্গগুলো নিয়েই ছড়িয়ে পড়ছে সারা বিশ্বে। আর তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে গুরুতর সতর্কবার্তা। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না হলে হতে পারে মারাত্মক ফল।

চিকুনগুনিয়ার বর্তমান প্রাদুর্ভাব বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। এই বছর ইতিমধ্যেই বিশ্বের ১১৯টি দেশে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে এবং প্রায় ৫.৬ বিলিয়ন মানুষ এই ভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছেন। WHO-এর মেডিকেল অফিসার ডায়ানা রোজাস আলভারেজ জানিয়েছেন, “এই পরিস্থিতি মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০০৪-০৫ সালের মহামারীর কথা, যখন ভারত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জগুলিতে লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন।”

কীভাবে ছড়ায় চিকুনগুনিয়া?

চিকুনগুনিয়া মূলত এডিস মশা (Aedes mosquito) দ্বারা ছড়ায়। বিশেষ করে Aedes aegyptiAedes albopictus এই ভাইরাসের প্রধান বাহক। একই মশা ডেঙ্গু ও জিকা ভাইরাসও ছড়ায়।

এডিস মশা সাধারণত দিনের বেলা কামড়ায়, বিশেষ করে সকাল ও বিকেলবেলা। তাই এই সময় সতর্ক থাকতে হবে।

উপসর্গ কী কী?

চিকুনগুনিয়ার প্রধান উপসর্গগুলি হল:

  • হঠাৎ তীব্র জ্বর
  • জয়েন্টে ব্যথা (অনেক সময় অসহ্য রকমের)
  • মাথাব্যথা
  • পেশিতে যন্ত্রণা
  • গাঁটে গাঁটে ফুলে যাওয়া
  • দুর্বলতা, অবসাদ

অনেক সময় এই ব্যথা কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

চিকিৎসা কী?

WHO জানিয়েছে, চিকুনগুনিয়ার এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনও অনুমোদিত ওষুধ বা ভ্যাকসিন নেই। উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসাই এই মুহূর্তে একমাত্র ভরসা। প্যারাসিটামল বা পেইন কিলার দিয়ে জ্বর ও ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।

এমনকি ভুল চিকিৎসা বা বিলম্বিত রোগনির্ণয় করলে জটিলতা তৈরি হতে পারে, বিশেষ করে বয়স্ক, গর্ভবতী মহিলা এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।

কোন কোন দেশে ছড়াচ্ছে?

  • লা রিইউনিয়ন
  • মায়োট
  • মরিশাস
  • ইউরোপের কিছু অংশ
  • লাতিন আমেরিকার দেশগুলি
  • এশিয়ারও কিছু দেশে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ

বিশেষ উদ্বেগের বিষয়, শুধু লা রিইউনিয়নের এক-তৃতীয়াংশ জনগণ ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর।

কীভাবে সাবধান থাকবেন?

✅ এডিস মশা থেকে বাঁচার উপায়:

  • ফুলহাতা জামাকাপড় পরুন
  • মশারি ব্যবহার করুন
  • দিনে ও রাতে মশারোধক লোশন বা স্প্রে ব্যবহার করুন
  • জমা জল না রাখুন বাড়ির আশেপাশে
  • খোলা জায়গায় জল জমতে দেবেন না

✅ শরীর দুর্বল বোধ করলে বা উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


বিশেষ সতর্কবার্তা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য অনুযায়ী, আমরা যদি সময়মতো ব্যবস্থা না নিই, তবে ২০২৫ সালে এই রোগ একটি নতুন মহামারী হয়ে দাঁড়াতে পারে। সচেতনতা ও প্রতিরোধই একমাত্র উপায়।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
আরও পড়ুন
error: Content is protected !!