দুর্গাপুজো ২০২৫ শুরু হতে বাকি !!

Days
Hours
Minutes
Seconds

বস্তির স্কুল থেকে ভারতের প্রধান বিচারপতি – বিচারপতি গবইয়ের অভূতপূর্ব সাফল্য

বস্তির স্কুল থেকে ভারতের প্রধান বিচারপতি – বিচারপতি গবইয়ের অভূতপূর্ব সাফল্য

১৪ মে, ২০২৫: ভারতের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনেই দেশের ৫২তম প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India) হিসেবে শপথ নিলেন বিচারপতি ভূষণ রামকৃষ্ণ গবই। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁকে রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ বাক্য পাঠ করান। বিচারপতি গবই হলেন ভারতের প্রথম বৌদ্ধ এবং দ্বিতীয় তফসিলি জাতিভুক্ত প্রধান বিচারপতি – যা ভারতীয় বিচারব্যবস্থায় একটি বড় মাইলফলক।


ছোটবেলা ও শিক্ষা: বস্তির ছেলেকে নিয়ে বড় স্বপ্ন

১৯৬০ সালের ২৪ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের অমরাবতীর একটি অর্ধ-বস্তি এলাকায় জন্ম গ্রহণ করেন ভূষণ গবই। ছোটবেলায় তিনি যে স্কুলে পড়তেন, সেখানে বেঞ্চ-ডেস্ক ছিল না, মেঝেতেই বসে ক্লাস করতে হতো। তিনি এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন –

“ড. আম্বেদকরের প্রচেষ্টাতেই আমি আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হতে পেরেছি।”

তাঁর বাবা, আর.এস. গবই, একজন বিশিষ্ট আম্বেদকরপন্থী নেতা ও প্রাক্তন রাজ্যপাল ছিলেন, যিনি সমাজসেবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।


পেশাগত জীবন: আইনজীবী থেকে দেশের প্রধান বিচারপতি

  • ১৯৮৫: বম্বে হাই কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কেরিয়ার শুরু।
  • ২০০৩: বম্বে হাই কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত।
  • ২০১९ সালের ২৪ মে: সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত।
  • ২০২৫ সালের ১৪ মে: ভারতের ৫২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ।

তিনি বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি পরিচালনা করেছেন এবং তাঁর রায়ের যুক্তিকতা বিচারজগতে প্রশংসিত হয়েছে।


আবেগঘন মুহূর্ত: মায়ের পায়ে পড়ে আশীর্বাদ

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে বিচারপতি গবই তাঁর মা কমলতাই গবই-এর পায়ে হাত দিয়ে আশীর্বাদ নেন। এই মানবিক মুহূর্ত দেশজুড়ে আবেগের জোয়ার তুলেছে।


কার্যকাল ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বিচারপতি গবইয়ের কার্যকাল থাকবে ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ পর্যন্ত। এই স্বল্প সময়ের মধ্যেও তিনি ন্যায়বিচার, অন্তর্ভুক্তি ও প্রান্তিক জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।


ঐতিহাসিক তাৎপর্য: তফসিলি জাতিভুক্ত বিচারপতিদের পদার্পণ

  • প্রথম তফসিলি জাতিভুক্ত প্রধান বিচারপতি: কেজি বালকৃষ্ণণ (২০০৭-২০১০)
  • দ্বিতীয় তফসিলি জাতিভুক্ত ও প্রথম বৌদ্ধ প্রধান বিচারপতি: ভূষণ রামকৃষ্ণ গবই

বিচারপতি ভূষণ গবইয়ের জীবনযাত্রা একটি অনুপ্রেরণা। তিনি প্রমাণ করেছেন, প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও অদম্য ইচ্ছাশক্তি, শিক্ষা এবং সামাজিক ন্যায়ের প্রতি দায়বদ্ধতা একজন মানুষকে দেশের সর্বোচ্চ আসনে পৌঁছে দিতে পারে।

Facebook
Twitter
WhatsApp
Telegram
Email
Print
error: Content is protected !!