বাংলা কনটেন্টপ্রেমীদের জন্য নতুন এক চমক হয়ে এসেছে অ্যান্থোলজি সিরিজ ‘ভূতপূর্ব’। এটি শুধুমাত্র তিনটি গল্পের সমন্বয় নয়—এ এক অভিজ্ঞতা, যেখানে সময়, স্মৃতি ও রহস্যের নিপুণ মেলবন্ধন দর্শককে গা ছমছমে এক জগতে নিয়ে যায়।



এই সিরিজের প্রেক্ষাপট ১৯৬০-এর দশকের শেষভাগে, যখন এক বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যায় বিভূতিভূষণের বাড়িতে এসে হাজির হয় দুই অচেনা ব্যক্তি—নীলকণ্ঠ ও শশীধর। গল্পের মোড় নেয় রহস্যময়তায়, যখন আড্ডার মধ্যে উঠে আসে তিনটি গল্প, যা প্রথমে বিচ্ছিন্ন মনে হলেও শেষে এসে যুক্ত হয়ে যায় এক সূক্ষ্ম সুতায়।


🌑 প্রথম গল্প: ‘মনিহারা’
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী গল্প থেকে অনুপ্রাণিত এই অধ্যায়ে দেখা যায় বনেদি ব্যবসায়ী ফণীভূষণ সাহা ও তার স্ত্রীর গয়নার প্রতি মোহ। এই মোহ কিভাবে এক ভয়ানক পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় গল্পটি।

🌘 দ্বিতীয় গল্প: ‘তারানাথ তান্ত্রিক’
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি এই চরিত্র আমাদের নিয়ে যায় অলৌকিকতার রাজ্যে। গৃহত্যাগী তারানাথের অভিজ্ঞতা, মাতু পাগলীর দীক্ষা, আর অদ্ভুত কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে তৈরি হয় অন্ধকার, গভীর ও চিন্তনমূলক একটি অধ্যায়।

🌑 তৃতীয় গল্প: ‘শিকার’
মনোজ সেনের রচনা অবলম্বনে তৈরি এই গল্পে উঠে আসে এক শিক্ষিত যুবক পূর্ণেন্দুর জীবন, যিনি ইন্দো-চীন যুদ্ধোত্তর সমাজে অপরাধের জগতে পা রাখেন। এখানে ভয়াবহ বাস্তবতা মিশে যায় এক অদ্ভুত রহস্যের সঙ্গে।
এই তিনটি গল্প শেষপর্বে এসে যেভাবে একে অপরের সঙ্গে জুড়ে যায়, তা দর্শকের মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে।
ভূতপূর্ব কেবলমাত্র একটি হরর সিরিজ নয়, বরং এটি বাংলা সাহিত্যের ঐতিহ্য, অতৃপ্ত আত্মার খোঁজ এবং মানবমনের রহস্যময় গহীনতাকে একসাথে গেঁথে একটি মেধাবী চিত্রনাট্যে রূপ দেয়।

📺 দর্শক প্রতিক্রিয়া ও বিশেষত্ব:
- গল্পের পরিবেশনায় রয়েছে সত্তরের দশকের অসাধারণ সেট ডিজাইন
- মনোজ্ঞ চিত্রনাট্য ও সংলাপে ফুটে উঠেছে সাহিত্যিক গাম্ভীর্য
- প্রতিটি গল্পের শেষে অপ্রত্যাশিত মোড় দর্শকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে
যদি আপনি সাহিত্যের ছোঁয়া থাকা রহস্যগল্প, মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার ও অতৃপ্ত আত্মার সন্ধানে নির্মিত গল্প ভালোবাসেন, তবে ভূতপূর্ব সিরিজটি আপনার জন্য মাস্ট ওয়াচ। টিজারেই স্পষ্ট—এই রাতটা কেবল গল্প বলার জন্য নয়, বরং নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাওয়ার জন্য।