একুশে পা নিউজ ডেস্ক:
ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি (India US Trade Deal) নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়লেও কৃষকের স্বার্থে কোনও আপস করবে না ভারত — স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আমেরিকার একপাক্ষিক সুবিধা হবে এমন চুক্তিতে রাজি নয় কেন্দ্র। কৃষি, দুগ্ধজাত দ্রব্য ও জিএম বীজ আমদানির বিষয়ে দিল্লি নিজের অবস্থান বদলাবে না বলেও স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
কৃষকের পাশে দৃঢ় অবস্থান
প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “কৃষকের স্বার্থ আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। কৃষক, গোপালক, মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে কোনও পরিস্থিতিতেই আপস হবে না। আমি জানি, এর জন্য ব্যক্তিগতভাবে চড়া মূল্য দিতে হবে, কিন্তু আমি প্রস্তুত।” তাঁর এই বক্তব্যে দেশজুড়ে কৃষক সংগঠনগুলি উদ্দীপনা প্রকাশ করেছে এবং “কৃষক-প্রথম নীতি”-র প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে।
জিএম বীজ ও বিদেশি শস্য আমদানির বিরোধিতা
আমেরিকা সহ কিছু দেশ ভারতের বাজারে প্রবেশাধিকার চায়, বিশেষ করে গম, ভুট্টা, চাল ও সয়াবিন রফতানির ক্ষেত্রে। এসব দেশ জিএম (Genetically Modified) বীজ, বৃহৎ জমি ও যান্ত্রিক কৃষির উপর নির্ভরশীল। কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান প্রশ্ন তোলেন, “আমাদের অধিকাংশ কৃষক ১-৩ একর জমির মালিক, অনেকের আধা একরও নেই। বিদেশি কৃষিপণ্যের সঙ্গে এই প্রতিযোগিতা কি ন্যায়সঙ্গত?”
কৃষকের জীবিকা রক্ষায় আপসহীনতা
চৌহান জানান, বিদেশি কৃষিপণ্য বাজারে ঢুকলে দেশের কৃষিপণ্যের দাম ধসে পড়বে এবং কৃষকের জীবিকা সংকটে পড়বে। তাই প্রধানমন্ত্রী ও কৃষি মন্ত্রক স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে — কৃষকের স্বার্থেই বিদেশি চাপ প্রত্যাখ্যান করা হবে।
স্বদেশী আন্দোলনের ডাক
স্বাধীনতা দিবসের আগে কৃষিমন্ত্রী “স্বদেশী হোক মন্ত্র” স্লোগান তুলেছেন। তিনি বলেন, “দেশে তৈরি জিনিস ব্যবহার করলে অর্থনীতি শক্তিশালী হবে, কর্মসংস্থান বাড়বে এবং মহিলাদের স্বনির্ভরতা নিশ্চিত হবে।” ভারত বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি, এবং তৃতীয় স্থানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে।
খাদ্য সুরক্ষায় অটল প্রতিশ্রুতি
সরকার স্পষ্ট করেছে — দেশের কৃষিনীতি দিল্লি থেকেই নির্ধারিত হবে, বিদেশি রাজধানী থেকে নয়। ইউরিয়া, ডিএপি ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের সময়মতো সরবরাহ নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রক ও সার মন্ত্রক যৌথভাবে কাজ করছে। চৌহান বলেন, “কৃষককে সেবা করা ঈশ্বরকে সেবা করার সমান। কৃষকের কল্যাণেই দেশের ভবিষ্যৎ নিহিত।”
একপাক্ষিক চুক্তিতে অনড় আপত্তি
আমেরিকা চায় ভারত কৃষিপণ্য, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার পুরোপুরি খুলে দিক। কিন্তু নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে — তাড়াহুড়ো করে কোনও একপাক্ষিক চুক্তি নয়, বরং দেশের স্বার্থ ও কৃষকের সুরক্ষা আগে।